রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে টাস্কফোর্সের জরুরী বৈঠক

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে টাস্কফোর্সের জরুরী বৈঠক

ফাইল ছবি।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন প্রত্যাবাসন টাস্কফোর্সের কর্মকর্তারা। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার শহরে অবস্থিত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। এদিকে আগামী ২২ আগস্ট তিন হাজার ৫৪০ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে টেকনাফের কেরুণতলী প্রত্যাবাসন ঘাট ও নয়াপাড়া শালবন রোহিঙ্গা শিবিরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

এর মধ্যে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালামের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত আছেন (প্রত্যাবাসন টাস্কফোর্সের কর্মকর্তারা) চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুরুল আলম নেজামী, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, অতিরিক্ত আরআরসি শামসুদ্দৌজা নয়ন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসএম সরওয়াল কামালসহ সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রতিনিধিরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে থাকা এক কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। সরকারের নির্দেশনামতে, প্রত্যাবাসন সফল করতে সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কথা জানান। এ কর্মকর্তা আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার যেহেতু আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তাই প্রত্যাবাসন সফল হতে কোনো জটিলতা আছে বলে মনে হয় না। আগামী ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমার সরকার।

এর আগে বৈঠকে যোগদানের আগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যা যা প্রয়োজন তা তা করা হবে। সরকারের নির্দেশনামতে, আমরা প্রত্যাবাসন সফল করতে বদ্ধপরিকর। আজকের বৈঠক রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় খুবই গুরুত্ববহন করে। এদিকে শনিবার টেকনাফের সদর ইউনিয়নের কেরুণতলী প্রত্যাবাসন ঘাট প্রস্তুত করতে কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। ঘাটে দায়িত্বে থাকা প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের প্রতিনিধি মোহাম্মদ শহীদ জানান, এ ঘাট দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হওয়ার কথা রয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখানে কয়েক দিন ধরে ঘাট প্রস্তুতে বিভিন্ন কাজকর্ম চলছে।

একইভাবে প্রত্যাবাসন ঘাটে দায়িত্বরত ১৬ আনসার ব্যাটালিয়নের হাবিলদার মো. আইনুল হক বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঘাটে কয়েক দিন ধরে কাজ চলছে। তাদের আমরা সহযোগিতা করছি। অন্যদিকে একই দিন নয়াপাড়া শালবন রোহিঙ্গা শিবিরে সিআইসি কার্যালয়ের পাশে ‘প্রত্যাবাসনের তালিকায়’ নাম থাকা রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য তড়িঘড়িভাবে প্লাস্টিকের ছোট ঘর তৈরি করে ঘেরা দেয়া হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর নির্ধারিত সময়ে রোহিঙ্গাদের প্রতিবাদের মুখে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। ওই সময় উখিয়ার ঘুমধুম ও টেকনাফের নাফ নদের তীরে কেরুণতলী (নয়াপাড়া) প্রত্যাবাসন ঘাট নির্মাণ হয়েছিল। এর মধ্যে টেকনাফের প্রত্যাবাসন ঘাটে নির্মাণ করা প্যারাবনের ভেতর দিয়ে লম্বা কাঠের জেটি, ৩৩ আধাসেমি টিনের থাকার ঘর, চারটি শৌচাগার রয়েছে। সেখানে ১৬ আনসার ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।