নাগার্নো-কারাবাখের আরো অঞ্চল আজারবাইজানের দখলে

নাগার্নো-কারাবাখের আরো অঞ্চল আজারবাইজানের দখলে

ছবি:সংগৃহীত

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র সাথে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখনো যুদ্ধ বন্ধের কোনো ইঙ্গিত নেই। এদিকে আর্মেনিয়াকে হটিয়ে নাগার্নো-কারাবাখের আরো বেশ কিছু অঞ্চলের দখল নিয়েছে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। বুধবার এক টেলিভিশন বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ।

অন্যদিকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনইয়ান জানিয়েছেন, কূটনৈতিক আলোচনায় আজারবাইজানের সাথে যুদ্ধের সমাধান সূত্র মিলবে না। ভিডিও বিবৃতিতে দেশবাসীকে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে যুদ্ধে নামার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। দেশবাসীর কাছে করা আবেদনে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘এই সংকটকালে সকলে হাতে অস্ত্র তুলে নিন এবং দেশের জন্য লড়াই করুন।’

এক দিকে যখন তীব্র লড়াই অব্যাহত, তখন মস্কোয় ফের বৈঠকে বসেছেন আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। শুক্রবার তাদের বৈঠক করার কথা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র সাথে।

নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার এখনো পর্যন্ত কোনো সম্ভাবনা তৈরি হয়নি। দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতির চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার পরে লড়াই আরো তীব্র হয়েছে। দুই দেশরই অভিযোগ, সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। আজারবাইজানে বেসামরিক মানুষজনের উপর হামলা করছে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী। অন্য দিকে আজারবাইজানের সেনাবাহিনীও নাগার্নো-কারাবাখের বিশাল এলাকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। ১৯৯০ এর দশকে আজারবাইজানের মুসলিম জনগোষ্ঠীকে হটিয়ে কারাবাখ দখল করে বাস করতে শুরু করা আর্মেনীয়রা এখন আশ্রয়ের খোঁজে পালাতে শুরু করেছে। তারই মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঢুকে পড়েছে আর্মেনিয়া এবং নাগার্নো-কারাবাখেও। বহু মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হতে শুরু করেছেন।

এরই মধ্যে তুরস্ক ফের জানিয়ে দিয়েছে, আজারবাইজানকে যুদ্ধে সব রকম সাহায্যের জন্য প্রস্তুত আঙ্কারা। প্রয়োজনে সৈন্য পাঠিয়ে সাহায্য করতেও তৈরি তুরস্ক। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান প্রথম থেকেই এই সংঘাতে আজারবাইজানকে সমর্থন দিয়েছেন। আর্মেনিয়া তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিযোগও জানিয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো ফল হয়নি। বুধবার প্রেসিডেন্ট এরদোগান ফের জানিয়ে দিয়েছেন, নাগার্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অবিভক্ত অংশ। আজারবাইজানের সেনাবাহিনী সেই অংশ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। তুরস্ক সব রকম ভাবে তাদের সাহায্য করবে।

আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, কূটনৈতিক ভাবে এই সংঘাতের অবসান হওয়া মুশকিল। আর তাই দেশের মানুষের কাছে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা,‘সকলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হোন। হাতে অস্ত্র তুলে নিন। আর্মেনিয়াকে রক্ষা করুন।’

এই পরিস্থিতিতে তেহরানের কাছেও বার্তা পাঠিয়েছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তার বক্তব্য, তেহরান যদি শান্তিপূর্ণ সমাধানের রাস্তা তৈরি করতে পারে, তা হলে আর্মেনিয়া তা মেনে নেবে। বস্তুত, আর্মেনিয়া ব্রাসেলসেও প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। ন্যাটো এবং ইইউ-র সঙ্গে আলোচনা করবেন সেই প্রতিনিধি।

মস্কোতেও তৃতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফের বৈঠক শুরু করেছেন। শুক্রবার মস্কোতেই তাদের বৈঠক করার কথা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র সাথে।