ভারত-চীনের বৈরিতা বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে প্রভাব ফেলবে না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভারত-চীনের বৈরিতা বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে প্রভাব ফেলবে না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৪৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ ঘুরে দেখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, চীন ও ভারতের বৈরি সম্পর্ক বাংলাদেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করবে না। দু’টি দেশই বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। তাই তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না।
শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
রূপপুর পারমানবিক প্রকল্পের বিভিন্ন কাজে ভারতের ভূমিকার কথা তুলে ধরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আমাদের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত প্রতিবেশী ও বন্ধু রাষ্ট্র।’ ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের অপরিসীম অবদান আছে। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বে কখনো চিড় ধরেনি। চীনও বাংলাদেশের উন্নয়নের সহযোগী বিশ্বস্ত বন্ধু রাষ্ট্র। ভারত চীনের মধ্যে বৈরি সম্পর্ক থাকলেও তা আমাদের ওপর প্রভাব ফেলবে না,’ বলেন মন্ত্রী।
এর আগে, মন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিদর্শন করেন এবং রাশিয়া থেকে পাঠানো রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের রিয়েকটর প্রেশার ভেসেল পরিদর্শন করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে মোমেন আরও বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প আমাদের জন্য বিশাল একটি অর্জন। আমাদের মতো দেশের জন্য এই অকল্পনীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন কেবল প্রধানমন্ত্রীর দুঃসাহসিক সিদ্ধান্তের কারণেই সম্ভব হয়েছে। আমরা নিউক্লিয়ার মারণাস্ত্র ব্যবহারের বিপক্ষে সোচ্চার, কিন্তু মানুষের উপকারে ইতিবাচক কাজে নিউক্লিয়ার টেকনোলজি ব্যবহারের পক্ষে।’ এটি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক বৃদ্ধি করবে। আমরা ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে সারা পৃথিবীর স্বীকৃতিও পেয়েছি।
এ সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে সারা পৃথিবী স্থবির হয়ে গেলেও রূপপুরে নিরবচ্ছিন্ন কাজ করেছেন রাশিয়ান ও দেশীয় কর্মীরা। তাদের কারণেই শিডিউল অনুযায়ী কাজ এগিয়ে চলেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হবে।’
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, ‘ইতোমধ্যেই রাশিয়া থেকে রিয়েকটর প্রেশার ভেসেলের ভারী যন্ত্রাংশ নদী পথে প্রকল্পের নবনির্মিত জেটিতে পৌঁছতে শুরু করেছে। যন্ত্রাংশগুলো নামাতে প্রয়োজনীয় কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় কারিগরি কার্যক্রম শেষে আগামী  ফেব্রুয়ারিতে তা মূল নিউক্লিয়ার বিল্ডিংয়ে সংযোজন শুরু হবে।’
এর আগে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৪৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ, পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলামসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।