মঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে চাঁদেরই যমজ সঙ্গী!

মঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে চাঁদেরই যমজ সঙ্গী!

চাঁদের যমজখ্যাত (101429) 1998 VF31 গ্রহানুটি মঙ্গলগ্রহের উপগ্রহ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

চাঁদেরও যমজ সঙ্গী আছে? তা কি প্রতিবেশী মঙ্গলের উপগ্রহ? এসব প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে নতুন আবিষ্কৃত একটি গ্রহাণু নিয়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে, মঙ্গলগ্রহের আড়ালে খুঁজে পাওয়া ওই গ্রহাণুর রাসায়নিক গঠন অবিকল চাঁদের মতো। প্রথম দর্শনেও চাঁদ বলে বিভ্রান্ত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। সম্প্রতি নর্থ আয়ারল্যান্ডের আরমাঘ অবজারভেটরি অ্যান্ড প্ল্যানেটোরিয়ামের পর্যবেক্ষণে পাওয়া ওই গ্রহাণুর চরিত্র বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত গবেষণার বিস্তারিত রিপোর্ট আগামী জানুয়ারিতে এক বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত হবে।

মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরঘুর করা চাঁদের যমজ সঙ্গীর নাম দেওয়া হয়েছে (101429) 1998 VF31. আপাতভাবে একে মঙ্গলের উপগ্রহের মতো মনে হলেও, আসলে তার কক্ষপথের মধ্যে পড়ে যাওয়া একটি গ্রহাণু। এর রাসায়নিক চরিত্র বিশ্লেষণ করে নাসার অ্যাস্ট্রোকেমিস্ট গালিন বরিসভ বলছেন, ”গ্রহাণুটি পাইরক্সিন ও আয়রনে পরিপূর্ণ। চাঁদের যে অংশ অন্ধকারাচ্ছন্ন, অমসৃণতায় ভরা, সেদিকের রাসায়নিক গঠনও এরকম। ওই এলাকা প্রায় মৃত্যু উপত্যকার মতো।” তবে একটা বিষয়ে বিজ্ঞানীরা এখনও সন্দিহান। কোথা থেকে এল এই (101429) 1998 VF31? এটা কি চাঁদেরই ভাঙা অংশ নাকি মঙ্গল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া কোনও খণ্ড? এর শরীর থেকে কতটা বিকিরণ ছড়ায়, তাও পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখতে চান বিজ্ঞানীরা।

তবে প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীদের ধারণা, (101429) 1998 VF3 কোনও সাধারণ গ্রহাণু নয়, একটি ট্রজান অ্যাস্টিরিওড চরিত্র অনুযায়ী, এরা ছোট সৌরজাগতিক বস্তু, যা বড় এবং ভারী গ্রহ বা নক্ষত্রের কক্ষপথে ঘুরতে থাকে, যার কারণে মনে হয় যে এরা উপগ্রহ। কিন্তু পার্থক্য রয়েছে উপগ্রহের সঙ্গে। বৃহস্পতি সর্ববৃহৎ গ্রহ হওয়ায়, তার কক্ষপথে এই ট্রজান অ্যাস্টিরিওড-এর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। অনেক সময়ে এদের আকার এতই ছোট হয় যে শক্তিশালী টেলিস্কোপেও ধরা না পড়তেই পারে। (101429) 1998 VF3 অবশ্য তত ছোট নয়। এর রহস্য যাইই হোক, আপাতভাবে মঙ্গলগ্রহের আড়াল থেকে আলোয় আসা চাঁদের মতো গ্রহাণুকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের উৎসাহ এখন তুঙ্গে।