আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগ

আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগ

আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহরাব মনাৎসাকন্যান

প্রবল প্রতিবাদের সামনে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহরাব মনাৎসাকন্যান। সোমবার রাতে তার পদত্যাগের কথা ফেসবুকে আপলোড করেছেন আর্মেনিয়া সরকারের মুখপাত্র।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের ফলে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনয়ানের উপর চাপ আরো বাড়লো বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

যত দিন যাচ্ছে, আর্মেনিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ততই প্রবল হচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, যেভাবে আজারবাইজানের সাথে শান্তিচুক্তি হয়েছে, তা মেনে নেয়া যায় না। চুক্তিতে আর্মেনিয়াকে 'ঠকানো' হয়েছে। 'অপমান' করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, প্রায় আড়াই হাজার সেনা এই যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন। চুক্তিতে সই করে সেই সেনাদেরও অপমান করা হয়েছে।

আর্মেনিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, সাবেক সেনাদের একটি দল প্রধানমন্ত্রীকে খুন করে সরকার ফেলে দেয়ার চক্রান্ত করেছিল। ওই দলের বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বস্তুত, রাশিয়া এবং আমেরিকার সাথে সমস্ত আলোচনা মূলত পররাষ্ট্রমন্ত্রীই করেছিলেন। এর আগে তিনটি চুক্তিতেও তিনি সই করেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধবিরতির সেই কোনো চুক্তিই বাস্তবে কার্যকরী হয়নি। তবে এই যুদ্ধে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সেই দায় স্বীকার করেই পদত্যাগ করেছেন তিনি।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর উপর আরো চাপ বাড়ালো। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ আরো তীব্র হয়েছে। কিন্তু সরকার পড়ে গেলে পরবর্তী দায়িত্ব কে নেবে, তা নিয়ে এখনো কিছু জানায়নি বিক্ষোভকারীরা। তাদের কেবল একটিই বক্তব্য-- আজারবাইজানের সাথে যে চুক্তি সই হয়েছে, তা মেনে নেয়া যাবে না।

সরকারপক্ষের বক্তব্য, চুক্তি না মেনে উপায় নেই। এর মধ্যেই সেনাবাহিনীতে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। আজারবাইজানের সেনার সাথে আর্মেনিয়ার পেরে ওঠা সম্ভব নয়। প্রযুক্তিগতভাবেও আজারবাইজানের সেনাবাহিনী অনেক বেশি উন্নত। শুধু তাই নয়, তুরস্ক তাদের সাহায্য করছে। এই পরিস্থিতিতে আর্মেনিয়া খানিক বাধ্য হয়েই চুক্তিতে সই করেছে।

এ দিকে, গোটা এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে টেলিফোনে কথা বলেছেন রাশিয়া এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। সোমবার ভ্লাদিমির পুটিন ফোন করেছিলেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে। নাগোর্নো-কারাবাখের পরিস্থিতি নিয়ে দু'জনে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। দুজনই জানিয়েছেন, আগের চেয়ে এলাকার পরিস্থিতি অনেক স্বাভাবিক। শরণার্থীদের নিয়ে এ বার ভাবনাচিন্তা করা দরকার। পাশাপাশি ওই অঞ্চলের চার্চ এবং অন্যান্য ধর্মীয় স্থান যাতে সুরক্ষিত থাকে, সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে