পাবনা সুগার মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত, শ্রমিক-কর্মচারীরা প্রতিবাদে বিক্ষোভ

পাবনা সুগার মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত, শ্রমিক-কর্মচারীরা প্রতিবাদে বিক্ষোভ

চিনিকল বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ।

রাষ্টায়ত্ত চিনিকল বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে এমন খবরের প্রতিবাদে ঈশ্বরদী সোচ্চার হয়ে উঠেছে শ্রমিক সংগঠন।

শনিবার (২১ নভেম্বর) পাবনা সুগার মিলস লিঃ এর প্রধান ফটকের সামনে পাসুমি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এবং আখচাষী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা।

দেশের সুগার মিলগুলোর ক্রমবর্ধমান লোকসান ঠেকাতে ১৬ টি সুগার মিলের মধ্যে ৮টি সুগার মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প কর্পোরেশন। এ বন্ধ প্রক্রিয়ার মধ্যে পাবনা সুগার মিলস্ লিঃ চিনি কলের নাম আসায় মিল সচল রাখতে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা।

বাংলাদেশ আখচাষী ফেডারেশনের সভাপতি সাজাহান আলী বাদশার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন  আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মিন্টু, পাবনা সুগার মিল শ্রমিক কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন ও কৃষক নেতা মুরাদ আলী মালিথা প্রমুখ।

তাদের দাবী সরকারের ৮টি চিনিকল বিরাষ্ট্রীয়করণ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। কারন সুগার মিল বন্ধ হলে শ্রমিক কর্মচারিদের না খেয়ে পথে বসতে হবে। তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে পাবনা সুগার মিল বন্ধ না হয়।

বাংলাদেশ আখচাষী ফেডারেশনের সভাপতি সাজাহান আলী বাদশার বলেন, ইতিমধ্যে সরকার দেশের দশটি চিনিকল বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। শিল্প মন্ত্রণালয় তালিকা দিয়ে সরকারকে সুপারিশ করেছে মিলগুলো বন্ধ করার জন্য। সেই তালিকায় পাবনা সুগার মিল রয়েছে। ইতিমধ্যে শ্রমিকদের পাওনার হিসাব করেছে সরকার। আসলে পাওনা মিটিয়ে দিলে শ্রমিকরা আগামিতে কি করবে এটা আগে সরকারকে ভাবতে হবে।

পাবনা সুগার মিল শ্রমিক কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন বলেন, এই সুগার মিল আমাদের প্রাণ। আন্দোলন করতে গিয়ে যদি রক্তাক্ত হতে হয় তাহলে আমি মিছিলের সামনে থাকবো। বুলেট ছুড়লে প্রথমে আমি বুক পেতে দিবো। পাবনা সুগার মিলের সকল শ্রমিককে আগামি দিনে যদি বৃহত্তর আন্দোলন হয় তাহলে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহবান জানান তিনি।

পরে শ্রমিকরা স্লোগান দিয়ে সুগারমিলের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করে। পাবনা সুগার মিলের দুই শতাধিক শ্রমিক কর্মচারি কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের পাকুড়িয়া মৌজার ৬০ একর জমির উপর পাকিস্তান সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় ‘পাবনা সুগার মিল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে আখ মাড়াই মওসুমে মিলটির পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়। মিলটি ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে বাণিজ্যিকভাবে চিনি উৎপাদন শুরু করে। চালুর পর থেকেই মিলে উৎপাদন ঘাটতি শুরু হয়। গত ২৮ বছরে মিলটি উৎপাদন ঘাটতিতে লোকসান দিয়েছে ৪০০ কোটি টাকার বেশি।