সিরাজগঞ্জে বিড়ি শ্রমিকদের সমাবেশ, দুরবস্থা থেকে মুক্তি চায় বিড়ি শ্রমিকরা

সিরাজগঞ্জে বিড়ি শ্রমিকদের সমাবেশ, দুরবস্থা থেকে মুক্তি চায় বিড়ি শ্রমিকরা

সিরাজগঞ্জে বিড়ি শ্রমিকদের সমাবেশ।

একদিকে করোনার ভয়াল ছোবল অন্যদিকে কর্মহারিয়ে চরম অসহায়ত্বে দিনাতিপাত করছে অসহায় বিড়ি শ্রমিকরা। বিড়ির উপর অতিরিক্ত করারোপের ফলে পরিবার নিয়ে সংকটে পড়েছে ২০ লক্ষাধিক বিড়ি শ্রমিক।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বেলা ১১টায় সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন সংলগ্ন স্বাধীনতা স্কয়ারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে শ্রমিকদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন বিড়ি শ্রমিক নেতারা। 

এসময় তারা চলতি অর্থবছরের বাজেটে প্রতি প্যাকেট বিড়িতে ধার্যকৃত অতিরিক্ত ৪ টাকা মূল্যস্তর প্রত্যাহার, শ্রমিকদের সপ্তাহে ৬ দিন কাজের নিশ্চয়তা, বিড়ির উপর অর্পিত ১০% অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার, বিড়িকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণা, নকল বিড়ির ব্যবসা ও অনলাইনে বিড়ি তৈরীর লাইসেন্স বন্ধসহ ছয় দফা দাবি জানান। সমাবেশে কয়েক হাজার বিড়ি শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।

সিরাজগঞ্জ জেলা বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হারিক হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এমকে বাঙ্গালী, কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, আবুল হাসনাত লাভলু, শামীমুল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন প্রমুখ ।

বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এমকে বাঙ্গালী বলেন, ধূমপান হিসেবে বিড়ি ও সিগারেট দুটোই ক্ষতিকর। সরকার ধূমপান বন্ধের পরিকল্পনা হিসেবে তামাকজাত পণ্যের উপর ট্যাক্স বৃদ্ধি করছে। কিন্তু বিড়িতে বৈষম্যমূলকভাবে ট্যাক্স বৃদ্ধি করা হয়েছে। বহুজাতিক কোম্পানীকে সুযোগ সৃষ্টির জন্য এ বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। বর্তমান করোনাকালীন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের জন্য বিড়ির উপর অর্পিত বাজেটটি মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে প্রতি প্যাকেটে বিড়িতে মূল্যস্তর ৪ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে । অপরদিকে নিম্নস্তরের প্রতি প্যাকেট সিগারেটের মূল্যস্তর মাত্র ২ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও মাধ্যম স্তরের সিগারেটের কোন মূল্য বৃদ্ধি পায়নি। এটা অত্যন্ত বৈষম্যমূলক ও জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।

এর ফলে বিড়ি মালিকরা করের বোঝা সহ্য করতে না পেরে বিড়ি কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বিকল্প কাজ না পেয়ে শ্রমিকরা বেকার জীবন যাপন করছে। পরিবার নিয়ে চরম অসহায়ত্বে দিন যাপন করছে। তারা করোনায় আক্রান্ত না হয়ে কাজের অভাবে মুজুরী না পেয়ে অনাহারেই দিন কাটাচ্ছে। দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের দিকে ধাবিত হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সমাবেশ শেষে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শ্রমিক নেতারা।