পাবনায় কালেক্টরেট সহকারীদের কর্মবিরতিতে কাজ কর্ম স্থবির

পাবনায় কালেক্টরেট সহকারীদের কর্মবিরতিতে কাজ কর্ম স্থবির

ছবি : প্রতিনিধি

পদবী ও গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে পাবনায় ৯ম দিনে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস)। ১৫ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন পূর্ণ দিবস (সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা) কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।

বুধবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টায় কর্মবিরতি শুরু করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়য়ের নিচ তলার বারান্দায় অবস্থান নেন কালেক্টরেট সহকারী সমিতির নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন।

দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে পাবনা জেলা প্রশাসনের কার্যক্রম। ভোগান্তিতে পড়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সেবা গ্রহীতারা।

কালেক্টরেট কার্যালয়ে কর্মরত ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারিগণ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস) এর কর্মসূচির সাথে একাত্ত্বতা প্রকাশ করেছেন। ৪র্থ  শ্রেণীর কর্মচারি সমিতির সভাপতি এমদাদুল হক মিলন বলেন, কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস)  কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক ঘোষিত কর্মসূচি যৌক্তিক ও ন্যায় সঙ্গত দাবি। অনতিবিলম্বে তাদের যৌক্তিক ও ন্যায় সঙ্গত দাবি মেনে নেয়ার জন্য একাত্ততা প্রকাশ করছি। এ সময়ে  ৪র্থ শ্রেণীর সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

পাবনা সাথিঁয়া উপজেলার সবুজ হোসেন জানান, জমির কাগজ উত্তোলনের জন্য আসছি কিন্তু দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকায় কাগজ উঠাতে পারলাম না। যা আমার জন্য কষ্টকর।

চাটমোহর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মিঠু আহমেদ বলেন,একটি বিশেষ প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে আসছিলাম; কিন্তু দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকায় ফেরত যেতে হচ্ছে।

কালেক্টরেট সহকারী সমিতির কর্মচারিগণ তাদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নে বিভিন্ন স্লে¯াগানসহ বক্তব্য দেন। তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৩ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এটি বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করে। একই বছওে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ডিসিদের মুক্ত আলোচনায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে ২০১৪ সালের ১৭ জুন চিঠি দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সর্বশেষ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখের পাক্ষিক  গোপনীয় প্রতিবেদনে আমাদের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সদয় অনুমোদন দিয়েছেন এবং সে বিষয়ের পত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। একই বছর ডিসি সম্মেলনের মাঠ প্রশাসনে কর্মরত কর্মচারীদেও বেতন গ্রেড অনুযায়ী প্রতিটি পদের নাম পরিবর্তন অথবা মাঠ প্রশাসনে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের সচিবালয়ের কর্মচারীদের মতো পদোন্নতির বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এটা বাস্তবায়নে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

বক্তারা আরোও বলেন, আমরা আজ ২০টি বছর আমাদের ন্যায় সঙ্গত দাবী বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলনসহ উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট স্বারকলিপি প্রদান করেছি। ইতোমধ্যে সারাদেশের প্রায় ২২-২৪ মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/অধিদপ্তরের কর্মচারিদের ১০ম গ্রেড প্রদান করা হযেছে কিন্তু আমরা কালেক্টরেট কর্মচারিরা সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করি অথচ আমাদের ভাগ্যেও কোন উন্নতি নাই। আমরা সারাদেশে এবার যে আন্দোলন শুরু করেছি দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমান থাকবে।

এদিকে কালেক্টরেট কর্মচারীরা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কার্যক্রমে স্থবিরতার সৃষ্টি  হয়েছে। প্রতিদিন সেবা প্রার্থীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়েও সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।