এরদোগান ভেবেছিলেন কবিতাটি কারাবাখ নিয়ে রচিত

এরদোগান ভেবেছিলেন কবিতাটি কারাবাখ নিয়ে রচিত

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান আজারবাইজান সফরে গিয়ে একটি বিতর্কিত কবিতা আবৃত্তি করে যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছেন সে সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগ্লু।

তিনি শনিবার রাতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফের সঙ্গে এক টেলিফোনালাপে বলেছেন, ইরান-আজারবাইজান সীমান্তবর্তী আরাস নদী নিয়ে এরদোগান যে কবিতা আবৃত্তি করেছেন সেটিকে তিনি নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতা নিয়ে রচিত হয়েছে বলে ভেবেছিলেন।চাভুসওগ্লু দাবি করেন, এরদোগান মোটেই জানতেন না যে, এই কবিতার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক রয়েছে।

নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাম্প্রতিক যুদ্ধে আর্মেনিয়ার হাত থেকে নিজের ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার আজারবাইজান এক উৎসব পালন করে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ওই উৎসবে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানী বাকুতে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের উপস্থিতিতে এক বক্তব্যে তুর্কি প্রেসিডেন্ট আজারবাইজান ও ইরানের সীমান্তবর্তী আরাস নদী নিয়ে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী কবিতা আবৃত্তি করেন। ওই কবিতায় ইরানের আজারবাইজান প্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় আরাস নদীর উত্তর অংশে অবস্থিত বর্তমান স্বাধীন রাষ্ট্র আজারবাইজানের পক্ষ থেকে আক্ষেপ প্রকাশ করা হয়েছে।

এরদোগান যে কবিতা আবৃত্তি করেছে তার একটি লাইন ছিল এরকম : “তারা আরাস নদী আলাদা করে পাথর-রড দিয়ে ভরাট করেছে। আমি তোমাদের থেকে আলাদা হবো না। তারা আমাদের জোর করে আলাদা করেছে।”

ইরানের আজারবাইজান প্রদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এরদোগানের এই অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য ও অনধিকারচর্চার বিরুদ্ধে তেহরান তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তেহরানে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ ব্যাপারে ইরানের প্রতিবাদের কথা জানানো হয়। এছাড়া, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তুর্কি সরকারও আঙ্কারায় নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে।

শেষ পর্যন্ত তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করলেন যে এরদোগান না জেনে ওই কবিতা আবৃত্তি করেছেন। তবে তুরস্কের মতো একটি দেশের প্রেসিডেন্ট ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এরদোগান কতোটা না জেনে ওই কবিতা আবৃত্তি করেছেন তার আসল রহস্য আজারবাইজানকে নিয়ে তুরস্কের ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনাই যথাসময়ে বলে দেবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
সূত্র : পার্স টুডে