হিজরী নববর্ষ ১৪৪১ এর শুভেচ্ছা

হিজরী নববর্ষ ১৪৪১ এর শুভেচ্ছা

শামীম ওসমান

পৃথিবীতে দিন সপ্তাহ মাস বছর গণনার জন্য তিনটি সাল ব্যাপকভাবে প্রচলিত । যেমন:-বাংলা সন , খ্রিস্টাব্দ, আরবি হিজরী । আজ হিজরী নববর্ষ ১৪৪১ এ পদার্পণ। হিজরীর প্রথম দিন বাংলাদেশ আজ ছুটির দিন । এই নববর্ষ কেমন হবে পৃথিবীর কোন মানুষ বলার সাধ্য নেই । তবে আমরা সবাই ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ এই কামনা করি প্রতিটি দিনই হোক মানুষের জন্য সুখের আনন্দের ও ভালবাসার। এবং জড়িয়ে থাকুক প্রতিটা দিন সুখ ও শান্তিময়। সমৃদ্ধির হোক প্রতিটি দেশের জন্য। এই নববর্ষে প্রতিটি স্বাধীন দেশ তার সার্বভৌমত্বের উপর টিকে থাকুক। পরাধীন দেশগুলো তাদের পরাধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখুক । কোন মানুষই চায় না তার জীবনে দিনগুলো কষ্টে কাটুক । কোন দেশ চায় না তার সারাটা জীবন পরাধীনতার শৃংখলে আবদ্ধ থাকুক । আমরা বাংলাদেশী ‌। আমরা মুসলিম আমাদের মুসলিম হিসেবে আমাদের নিজস্ব শিক্ষা সংস্কৃতি ঐতিহ্য নিয়ম রীতিনীতি সংবিধিবদ্ধ । এর বাহিরে গিয়ে কেউ কিছু করতে চাইলে হয়তো সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপারে অন্তর্ভুক্ত হবে। বাংলা নববর্ষ কে বরণ করা হয়। উদযাপন করা হয় সেটা কতটুকু মঙ্গলজনক শোভনীয় বা মানুষের জীবনে আশার বাণী নিয়ে আসতে পারে তা কোন বিবেকবান ব্যক্তির কাছে প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যেতে পারে। নববর্ষ বরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা আতশবাজি গান-বাজনা বাজিয়ে বরণ করা হয়। ইংরেজি নববর্ষ একইভাবে আতশবাজি গান-বাজনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিভিন্ন রীতিতে বরণ করে মানুষের সামনে যেভাবে উপস্থাপন করা হয় মনে হয় নববর্ষ বরণ করার রীতি নীতি রীতিনীতি এভাবে সংবিধিবদ্ধ। হয়তো বা আমাদের অনেকেরই জানা নেই কিন্তু আমরা নিজেদের থেকে অনেক বেশি অতিরঞ্জিত কাজকর্ম করে থাকি। হিজরী সন চন্দ্রের উপর নির্ভরশীল । চাঁদ দেখে মাস গণনা করা হয়। ইসলামী নিয়ম রীতিতে চাঁদ দেখার আলোকে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ইবাদত হজ ও কোরবানি পালন করা হয়। রমজান পালন করা হয়। পালন করা নিসফে শাবান লাইলাতুল কদর । চাঁদ দেখে প্রতিমাসে আল্লাহ রাসুল তিনটি করে রোজা রাখতেন।হিজরী সন প্রবর্তনের ইতিহাস অত্যন্ত স্মরনীয় ও পৃথিবীর বিখ্যাত। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু খিলাফত পরিচালনাকালীন রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে সমস্যার অনুধাবন করেন তখনই তিনি অন্যান্য ছাহাবীদের পরামর্শ নিয়ে রাসুল সালাম এর মৃত্যুর সাত বছর পর হিজরী সন প্রবর্তন এর পরামর্শ গ্রহণ করেন। আর সবাই মিলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় হয় যে , আল্লাহর নির্দেশে আল্লাহর রাসূল ৬২২ খ্রিস্টাব্দে ১২ সেপ্টেম্বর মোতাবেক ২৭ সফর মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মোতাবেক ৮ রবিউল আউয়াল কুবা পৌঁছেন। ২৭ সেপ্টেম্বর ৬২২ খ্রিস্টাব্দে ব মোতাবেক ১২ রবিউল আউয়াল মদিনা পৌঁছেন। হিজরতের সন কে স্মরণীয় করে রাখতেই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় হিজরত থেকে হিজরী সন গণনা শুরু হবে । আর তারইধারাবাহিকতায় আজকের হিজরী নববর্ষ ১৪৪১ । হিজরী নববর্ষে প্রত্যাশা থাকবে-

  • পৃথিবীর ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীর পূর্ণ স্বাধীন হোক।

  • ইসরাইলি দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত হয়ে ফিলিস্তিন হোক পূর্ণ স্বাধীন রাষ্ট্র ।

  • রোহিঙ্গা সংকটের সুষ্ঠু সমাধান হোক।

  • সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ বন্ধ হয়ে সিরিয়া হয়ে উঠুক মানুষের বাসস্থানের উপযোগী রাষ্ট্র ।

  • ইয়েমেনের হুতি সঙ্কট দূর হয়ে ফিরে আসুক শান্তির সুবাতাস ।

  • লিবিয়া আবার স্বাধীনভাবে ঘুরে দাঁড়াবে।

  • পৃথিবীর কোন রাষ্ট্র যেন কোনো সম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনে না পড়ুক ।

  • পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের স্বাধীনভাবে সুন্দর ভাবে তাদের জীবনযাপন করার সুযোগ পাক।

  • পৃথিবীর প্রতিটি শিশু যেন তাদের পূর্ণ অধিকার পায় ।

  • পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ শিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক।

  • বাংলাদেশ হোক মাদক, সন্ত্রাস ও ডেঙ্গু মুক্ত।