অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে প্রধানমন্ত্রীর একগুচ্ছ নির্দেশনা

অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে প্রধানমন্ত্রীর একগুচ্ছ নির্দেশনা

ফাইল ছবি।

অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং অগ্নি দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নি দুর্ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী এসব ‘অনুশাসন’ দেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার ভবনগুলো পরিদর্শনের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ২৪টি দল গঠন করেছে। এই দলগুলো ভবন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলো

# বহুতল ভবন তৈরির সময় ফায়ার সার্ভিসের ক্লিয়ারেন্সের পাশাপাশি সেটা ‘ভায়াবল’ কি না নিশ্চিত করা।

# অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা। ফায়ার সার্ভিসের যে অনুমোদন দেওয়া হয় কারখানার মত তা প্রতি বছর নবায়নের ব্যবস্থা করা।

# বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা।

# এক থেকে তিন মাসের মধ্যে অগ্নি নির্বাপন মহড়া করা।

# অগ্নিকাণ্ডের সময় ধোঁয়ায় শ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু এড়াতে ভবনে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি অবলম্বন

# পানির অভাবে অনেক সময় ফায়ার সার্ভিস কাজ করতে পারে না; তাই যেখানে যেখানে সম্ভব জলাশয় বা জলাধার তৈরি করা।

# লেকগুলো সংরক্ষণ করা।

# বহুতল ভবনে ওঠার জন্য ফায়ার সার্ভিসের ল্যাডারের সংখ্যা বাড়ানো।

রাজধানীর বনানীতে বৃহস্পতিবার এফআর টাওয়ার নামের একটি বহুতল ভবনে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সে সময় ভেতরে আটকা পড়েন অনেকে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

 

# প্রকৌশলীরা যেন পরিবেশ ও বাস্তবতার নিরেখে অবকাঠামোর নকশা করেন, তা নিশ্চিত করা।

# প্রতিটি ভবনে ফায়ার এক্সিট নিশ্চিত করা।

# অনেক জায়গায় ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে দরজা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফায়ার এক্সিট যেন সব সময় ওপেন থাকে, অর্থাৎ ম্যানুয়ালি যেন তা খোলা যায়।

# জরুরি প্রয়োজনে মানুষ যেন বহুতল ভবন থেকে তারপুলিনের মাধ্যমে ঝুলে নামতে পারে, সেই পদ্ধতি চালু করা।

# প্রতিটি হাসপাতাল ও স্কুলে বারান্দাসহ খোলা জায়গা রাখা।

# ভবনে আগুন লাগগে লিফট ব্যবহার না করা।

# প্রতিটি ভবনে কমপক্ষে দুটি এক্সিটওয়ে রাখা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এফআর টাওয়ানে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা।

“অনাকঙ্খিত এই দুর্ঘটনায় জাতি গভীরভাবে শোকাহত। দেশবাসীর সঙ্গে মন্ত্রিসভা এই মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের জন্য গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছে।”

গত ২৮ মার্চ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের ২৩ তলা ওই ভবনে আগুন লেগে ২৬ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন অর্ধশতাধিক মানুষ।

১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ভবনটি ২৩ তলা করা হয়েছিল এবং অগ্নি নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থা সেখানে ছিল না বলে অভিযোগ রয়েছে।