ভারতে কৃষি আইনে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের

ভারতে কৃষি আইনে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের

ছবি : সংগৃহীত

ভারতে মোদি সরকার বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। কৃষকদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে নরেন্দ্র মোদির জারি করা কৃষি আইনে স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই রায়ই বহাল থাকবে। তবে, নয়া কৃষি আইন ঘিরে তৈরি জটের সমাধানে আলাপ-আলোচনাতেই জোর দিচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। কৃষি আইন পর্যালোচনায় মঙ্গলবার চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই কমিটিকে কৃষি আইন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়, বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। কমিটিকে আদালতে রিপোর্ট জমার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ততদিন নয়া কৃষি আইনে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।

বিশেষজ্ঞ কমিটিতে রয়েছেন, ভূপেন্দ্র সিং মান (ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন), অনিল ঘানওয়াত (শেঠকারি সংগঠন), ডঃ প্রমোদ কিমার যোশী এবং কৃষি বিশেষজ্ঞ অশোক গুলাটি।

তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রায় দু’মাস ধরে দিল্লি সীমানায় অবস্থান বিক্ষোভ করছেন কৃষকরা। দাবি না মেটা পর্যন্ত তা চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে কৃষক সংগঠনগুলোর তরফে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এদিনের রায় বলেছে, দিল্লি সীমান্তে বিক্ষোভ না করে রামলীলা ময়দানে কৃষকরা যাতে আন্দোলন চালাতে পারেন তার জন্য নয়াদিল্লির পুলিশ কমিশনারের কাছে অনুমতি চাওয়া হোক।

এদিনের রায়ে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, কোনও আইন স্থগিত রাখার ক্ষমতা তাদের হাতে রয়েছে, কিন্তু তা অনির্দিষ্টকালের জন্য জারি থাক এমনটা আদালতের অভিপ্রায় নয়। আদালত জানিয়েছে, কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত একটি বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়া। এর ফলে পুরো বিষয়টি সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

সেপ্টেম্বরে সংসদে পাশ হওয়া তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রচুর মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাগুলি জোটবদ্ধ করে শুনানি চলছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। এদিন ছিল এই মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানি। শুরুতেই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, আইন তিনটি নিয়ে আদালত যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। একটানা আন্দোলনের জেরে মানুষের জীবনযাত্রা এবং সম্পত্তির উপরও প্রভাব পড়েছে। এর সঙ্গে জীবন ও মৃত্যু জড়িয়ে। যতটা ভালোভাবে সম্ভব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সোমবার কৃষি আইনের বিরুদ্ধে শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কেন্দ্র। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের বেঞ্চ জানায়, কৃষক বিদ্রোহ মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। কিছুটা একতরফাভাবেই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রের ভূমিকায় সুপ্রিম কোর্ট ‘হতাশ’ বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস