কাল পাবনা জেলায় এক হাজার ৮৬ গৃহহীন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পাবেন

কাল পাবনা জেলায় এক হাজার ৮৬ গৃহহীন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পাবেন

পাবনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ কবীর মাহমুদ প্রেস ব্রিফিংয় করেন।

আগামীকাল শনিবার ‘আশ্রয়নের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে মুজিব জন্মশতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে সারা দেশের ন্যায় পাবনার ৯ উপজেলায় ১ হাজার ৮৬ ভূমিহীন ও গৃহহীন পাবেন ‘স্বপ্নের নীড়’। 

মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পাবনা জেলায় এই গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে ০২ শতাংশ জমিসহ গৃহ বরাদ্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) পাবনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ কবীর মাহমুদ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক বলেন, গৃহ প্রদানের অংশ হিসেবে ঢাকা জেলায় ১,০৮৬ টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের অনুকূলে ০২ শতাংশ জমিসহ গৃহ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে পাবনা জেলায় প্রথম দফায় পাবনা সদর উপজেলায় ৪৪৯টি ঘর, সাথিঁয়া ৩৭২, আটঘরিয়া ৮৫, ফরিদপুর ৫০, ঈশ্বরদী ৫০, চাটমোহর ৩০, সুজানগর ২০, বেড়া ২০ এবং ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ১০ টি ঘর বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া পরবর্তী দফায় আবারো গৃহহীন ও ভূমিহীনদের যাছাই বাছাই করে সংখ্যা নির্ধারণ করে ঘর নির্মিত হবে।” 

জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ এর নেতৃত্বে নয়টি উপজেলার ইউএনও এবং এ্যাসিল্যান্ড সরাসরি তদারকি করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন।  এছাড়াও উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তারারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভূমিকা রেখেছেন। সর্বোপরি এসকল কর্মকর্তাদের তদারকিতে গড়ে উঠছে আশ্রয়হীন মানুষের স্বপ্নের ঠিকানা 'স্বপ্ননীড়'। আগামীকাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশব্যাপী এই 'স্বপ্ননীড়ের' উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,বলেন জেলা প্রশাসক। 

জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ এ প্রতিনিধিকে আরও বলেন,“'আশ্রয়ণের অধিকার-শেখ হাসিনার উপহার' স্লোগান সংবলিত এ প্রকল্পে সারাদেশের মত পাবনা জেলার প্রতিটি ভূমিহীন-ঘরহীন পরিবারের জন্য থাকছে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ঘর। প্রতিটি পরিবারের জন্য বানানো হচ্ছে দু’কক্ষবিশিষ্ট সেমিপাকা ঘর। ঘরগুলো ইটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি। ,“প্রতিটি গৃহে বৈদ্যুতিক সংযোগ, গভীর নলকুপ এবং স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেট নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে । প্রতিটি পরিবারের অনুকূলে ২ শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত করে তার কবুলিয়ত ও নামজারী সম্পন্ন করা হয়েছে। ‘যারা রাস্তায়, বস্তিতে থাকতো তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে গৃহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা কখনো কল্পনাও করিনি মাত্র দুই তিন মাসের ভেতরে এই ধরণের আধুনিক গৃহ পাবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসনের লোকেরা সরাসরি এ গৃহ নির্মাণের কাজ করছেন। এখানে দালাল ও ঠিকাদারদের দ্বারা করা হয়নি। তালিকায় যাদের নাম বাদ গেছে এবং যাদের প্রয়োজন তারা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের জমি ও গৃহ প্রদান করা হবে।” 

যে সব গৃহহীনরা ঘর পেয়েছেন; সেসব ঘরে তাদের নামের তালিকা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিদর্শণকালে আবাসনের ১৮ নং ঘর পাওয়া স্বামীহারা তিন সন্তানের জননী লাভলীর কাছে তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি আবেগাব্লুত হয়ে বলেন,‘এর চেয়ে বড় কিছু হবের পারে না। বড় কষ্টের সাথে ৩ গ্যাদা নিয়ে বাপের বাড়িত ছিলেম।’  ইউএনও স্যার আমার যে ঘর দিছে-আমি ছাওয়াল পাল নিয়ে তার জন্যি সারা জীবন দোয়া করবো।’ 
আগামীকাল (শনিবার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপকারভোগী পরিবারের নিকট গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।