বাদশাহ সালমানের সাথে যা বললেন বাইডেন

বাদশাহ সালমানের সাথে যা বললেন বাইডেন

বাদশাহ সালমান ও প্রেসিডেন্ট বাইডেন - ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল-সউদের সাথে ফোনালাপের মাধ্যমে কথা বলেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর এটিই সৌদি আরবের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে বাইডেনের প্রথম যোগাযোগ।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) তাদের মধ্যে এই ফোনালাপ হয় বলে হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে জানানো হয়। খবর ভয়েস অব আমেরিকা-

বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় নেতা ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণ থেকে সৌদি আরবের ভূমি রক্ষায় দেশটিকে সাহায্য করতে মার্কিন অঙ্গীকারের বিষয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি বাইডেন বৈশ্বিক মানবাধিকার ও আইনের শাসনে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বের বিষয়ে নিশ্চিত করেন।

এতে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি বিভিন্ন সৌদি-আমেরিকান অ্যাকটিভিস্ট ও লুজাইন আল-হাযলুলের জেল থেকে মুক্তিতে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার ও আইনের শাসনের বিষয়ে অবস্থানের গুরুত্বকে নিশ্চিত করেন।’

নারীদের গাড়ি চালনার অধিকার নিয়ে কাজ করা সৌদি অ্যাকটিভিস্ট লুজাইন আল-হাযলুল তিন বছর কারাগারে বন্দী থাকার পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান।

বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই নেতা ইয়েমেনে চলমান গৃহযুদ্ধের অবসানে কূটনীতিক প্রচেষ্টার বিষয়ে আলোচনা করেন।

এদিকে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সিতে (এসপিএ) প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতার ওপর জোর দিয়েছেন এবং পারস্পারিক স্বার্থের জন্য নিজেদের মধ্যে অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।’

এসপিএর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাদশাহ সালমান মার্কিন প্রেসিডেন্টকে যেকোনো হুমকির বিরুদ্ধে রাজ্যকে (সৌদি আরব) রক্ষায় ওয়াশিংটনের অঙ্গীকারে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।’

এতে আরও বলা হয়, বাইডেন ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতিতে জাতিসঙ্ঘের প্রচেষ্টায় সৌদি আরবের সহায়তার প্রশংসা করেন। বাদশাহ সালমান বলেন, সৌদি আরব ইয়েমেনে পূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানে এবং ইয়েমেনি জনগণের নিরাপত্তা ও উন্নতি অর্জনে আগ্রহী।

সালমান-বাইডেন ফোনালাপের আগে বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি সাংবাদিকদের এক সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক পুনর্বিন্যাস করার কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে, কিছু বিষয়ে আমরা আমাদের উদ্বেগকে প্রকাশ করবো এবং দায়বদ্ধতার প্রশ্নকে উন্মুক্ত করবো।’

নির্বাসিত সৌদি সাংবাদিক ও মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টের নিবন্ধক জামাল খাশগজির হত্যায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হতে যাওয়ার আগে সৌদি বাদশাহর সাথে ফোনালাপ করলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ইতোমধ্যেই বাইডেন এই প্রতিবেদন দেখেছেন বলে বুধবার অপর এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান জেন সাকি।

রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ থাকা জামাল খাশগজি সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও তার নীতির কড়া সমালোচক ছিলেন। যুবরাজের সমালোচনার জেরে তিনি দেশ ছেড়ে নির্বাসনে ছিলেন।

তুর্কি নাগরিক ও গবেষক খাদিজা চেঙ্গিসকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করতে গেলে ওয়াশিংটন পোস্টের এই নিবন্ধকারকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে হত্যা করে লাশ টুকরা টুকরা করা হয়।

সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রথমে হত্যাকাণ্ডের বিষয় অস্বীকার করলেও পরে তারা জানায়, কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় দুর্ঘটনাক্রমে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। ওই সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে বিচারের আওতায় আনা হয়।

সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা, আরব নিউজ