যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারবেন না শামিমা

যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারবেন না শামিমা

যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারবেন না শামিমা -ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত শামিমা বেগমকে দেশটিতে ফেরার অনুমতিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) আদালত সিরিয়ায় উগ্রবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে যাওয়া ব্রিটেনের সাবেক এই নাগরিকের বিরুদ্ধে এই আদেশ দেন।

আদালতের আদেশে বলা হয়, নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করতেও শামিমাকে যুক্তরাজ্যে আসার অনুমতি দেয়া হবে না।

২০১৫ সালে শামিমা বেগম আইএসে যোগ দিতে যখন লন্ডন ছাড়েন, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। দুই বন্ধুসহ ব্রিটেন ছেড়ে তুরস্ক হয়ে তিনি সিরিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন।

বর্তমানে ২১ বছর বয়সী শামিমা সিরিয়ার একটি বন্দী শিবিরে রয়েছেন। ২০১৯ সালে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়।

ওই সময় ব্রিটেনের আদালতের আপিল বিভাগ জানিয়েছিল, ব্রিটেনে আসার অনুমতি দেয়া হলে তিনি দেশে এসে তার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন।

কিন্তু শুক্রবার ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মাধ্যমে দেশটিতে আসার পথ শামিমা বেগমের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়।

ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী আইএসে যারা যোগ দিয়েছেন, তারা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

আদালতের আদেশে বলা হয়, ‘জনস্বার্থে বিশেষত জনগণের নিরাপত্তার বিবেচনায় এই মামলার বিষয়ে নায্য শুনানি অসম্ভব করেছে, যাতে আদালত সাধারণভাবে তা শুনেনি।’

সিরিয়ায় সংগঠনটির তথাকথিত ‘খেলাফত রাষ্ট্রের’ রাজধানী রাক্কায় শামীমা বাস করতেন এবং সেখানে এক আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন তিনি। তার তিন সন্তানের জন্ম হলেও সব শিশুরই মৃত্যু হয়েছে।

ব্রিটেনে শামিমা বেগমের মামলা উত্তেজনাকর বিতর্ক তৈরি করেছে। এক পক্ষ বলছে, আইএসে যোগ দিতে শামিমা নাগরিকত্বের অধিকার ছেড়ে গিয়েছেন। সুতরাং, তাকে আর ফিরিয়ে আনা যায় না। অন্যদিকে অপরপক্ষ তাকে রাষ্ট্রহীন রাখার বদলে দেশে ফিরিয়ে এনে যথাযথ বিচারের মুখোমুখি করার দাবি করছেন।

সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ২০১৯ সালে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা সাজিদ জাভেদ এক টুইট বার্তায় বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্রিটিশ নাগরিক ও সীমান্তের নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বশীল এবং এই কারণে নিরাপত্তা হুমকি বহন করা যে কারোর দেশটিতে প্রবেশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

অপরদিকে আদালতের এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে ইউকে হিউম্যান রাইটস গ্রুপ।

সংস্থাটি এক টুইট বার্তায় বলা হয়, ‘ন্যায় বিচারের অধিকার আমাদের সবাইকেই রক্ষা করে। আদালতের কোনো আদেশ ছাড়া কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া ভয়াবহ উদাহরণ সৃষ্টি করবে।’

এতে আরো বলা হয়, যদিও সরকার দাবি করছে শামিমা বেগম বাংলাদেশী নাগরিকত্ব নিতে পারে। কিন্তু শামিমা ব্রিটেনেই জন্ম নিয়েছেন এবং তার কখনোই বাংলাদেশী কোনো পাসপোর্ট ছিলো না।

সূত্র : আলজাজিরা