সৌদিতে হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করল ফ্রান্স, জার্মানি, বৃটেন

সৌদিতে  হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করল ফ্রান্স, জার্মানি, বৃটেন

ছবি: সংগৃহিত।

সৌদি আরবে তেল স্থাপনায় হামলার জন্য যৌথ বিবৃতিতে ফ্রান্স, জার্মানি ও বৃটেনের নেতারা দায়ী করেছে ইরানকে। তবে ওই বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। ওই দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভট দাবিই আওড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ। ওই হামলার বিষয়ে ইউরোপীয় নেতারা বলেছেন, এ হামলা নিয়ে আর কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। তা সত্ত্বেও তারা ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নেতৃত্বে সম্পাদিত পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে চুক্তির প্রতি অবিচল থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
 
গত ১৪ই সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় দুটি তেলক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহার করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইয়েমেনের বিদ্রোহী হুতিরা। তারা এর দায় স্বীকারও করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত ইরান। ইরান এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে শুরু হয়েছে এক যুদ্ধ উন্মাদনা। হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে সৌদি আরবও। ওদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সৌদি আরবে অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এসব নিয়ে জাতিসংঘে যোগ দেয়া বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন ও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এটা আমাদের কাছে পরিষ্কার যে, এই হামলায় দায় রয়েছে ইরানের। এ জন্য আর কোনো উপযুক্ত ব্যাখ্যা নেই। তবে চলমান তদন্তের প্রতি আমাদের সমর্থন আছে। তা থেকে আরো বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন ইস্যু সংশ্লিষ্ট থাকায় দীর্ঘ মেয়াদে পারমাণবিক কর্মসূচিতে একটি সমঝোতা মেনে নেয়ার সময় এসেছে ইরানের সামনে। তবে এই তিন নেতা ২০১৫ সালে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তির প্রতি অব্যাহতভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইরানের সঙ্গে তার দেশের উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি ক্ষমতায় আসার পর জলবায়ু বিষয়ক প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। বাতিল করেন ইরানের সঙ্গে করা ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি। সঙ্গে সঙ্গে আরোপ করেন অবরোধ। এর ফলে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে শুরু হয়েছে উত্তেজনা। এমন অবস্থায় সোমবার বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মাধ্যমে সমঝোতায় ইরানের সঙ্গে একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মার্কিন মিডিয়াকে দেয়া সাক্ষাতকারে ২০১৫ সালের চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেছেন, এটা হতে পারে একটি বাজে চুক্তি। আমি মেনে নিচ্ছি যে, এতে অনেক অনেক ত্রুটি রয়েছে। তাই আসুন একটি উন্নতর চুক্তি করি। আমি মনে করি, এমন একজন আছেন যিনি এমন একটি উন্নতর চুক্তি করতে পারেন। আমি বিশ্বাস করি এমন একজন আছেন যিনি ইরানের মতো জটিল অংশীদারকে বুঝতে পারেন। তিনি হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তাই আমি আশা করি একটি ‘ট্রাম্প ডিল’ হবে।

ওদিকে বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে একটি নতুন চুক্তির সম্ভাব্যতা উড়িয়ে দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন ছাড়াই ইউরোপীয় ওই তিন নেতা তাদের বাধ্যবাধকতা পূরণে বিকলাঙ্গতা দেখিয়েছেন। বর্তমান চুক্তিকে মেনে নেয়ার আগে একটি নতুন চুক্তি হতে পারে না।