ইলিশ না পেয়ে হতাশ পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীরা

ইলিশ না পেয়ে হতাশ পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীরা

ফাইল ছবি

পুরো পশ্চিমবঙ্গ শারদ উৎসবে মাতোয়ারা। তবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মৎস্যজীবীপল্লিতে এবার পৌঁছায়নি সেই আনন্দ। এ মৌসুমে সমুদ্রে মেলেনি ইলিশ। মাছ নেই, অর্থও নেই।

গত বছর এই মৌসুমে সমুদ্রে বেশ ইলিশ পেয়েছিলেন জেলেরা। মৎস্য ব্যবসায়ীরা প্রচুর ইলিশ হিমঘরে সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। এবার বাজারে সেই ইলিশই ছেড়েছেন তাঁরা। নতুন ইলিশ এবার তেমন জালে ওঠেনি। বাংলাদেশ পূজার শুভেচ্ছা হিসেবে এবার ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানি করেছে পশ্চিমবঙ্গে। তবে সেই ইলিশের দামও অত্যন্ত চড়া। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ রুপি থেকে থেকে ২ হাজার রুপিতে। তাই অনেকের ইলিশ খাওয়ার সাধ থাকলেও সাধ্য নেই।

এসব কারণেই এবার পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূলবর্তী দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জেলেপল্লিতে এখন দুর্গোৎসবের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে।

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর, কুলতলী , রায়দীঘি এলাকায় রয়েছে অধিকাংশ মৎস্যজীবী পরিবারের বাস। জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরতে ট্রলার নিয়ে পাড়ি দেন। এ ছাড়া রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরের সমুদ্র এলাকাও। সেখানেও প্রচুর জেলে থাকেন। তাঁরাও ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যান। কিন্তু এবার তাঁদের জালেও ওঠেনি ইলিশ। ইলিশ না পেয়ে ফিরে এসেছেন তাঁরা। অন্যদিকে মাছ না পেয়ে ওই সব এলাকার ইলিশ আড়তদারেরা প্রচুর ক্ষতির মুখে পড়েছেন। লাখ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা জেলেদের দিয়েছেন। তবে জেলেরা ইলিশ দিতে পারছেন না।

এই মৌসুমে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার আড়াই হাজার ট্রলার নিয়ে জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন । মাছ না পাওয়ায় প্রায় ৩০০ কোটি রুপি ক্ষতির মুখে ট্রলার মালিকেরা। শুধু দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপ থেকেই সমুদ্রে যায় ৯০০ ট্রলার।

সুন্দরবন মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলেছেন, এবার সমুদ্রে ইলিশ না মেলায় তাঁরা প্রচণ্ড আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। পুজোর আনন্দ তাঁদের এবার চলে গেছে। তাঁরা বলেছেন, জুন মাসের মাঝামাঝি সমুদ্রে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়। এরপর তারা সমুদ্রে ট্রলার নিয়ে গেলেও ইলিশ জোটেনি। ফলে এবার পুজোয় বাংলাদেশের ইলিশের পাশাপাশি চড়া দামে মিলেছে হিমঘরে রাখা গত বছরের ইলিশ। তা–ও চড়া দামে। ফলে এবার ইলিশ না পেয়ে হতাশ হয়েছেন এই রাজ্যের ইলিশপ্রিয় বাঙালি।