জাপানে টাইফুনের আঘাতে ১১ জন নিহত

জাপানে টাইফুনের আঘাতে ১১ জন নিহত

ছবি: সংগৃহিত

জাপানে আঘাত হানা এক ভয়াবহ টাইফুনে কমপক্ষে ১১ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরো অনেকে। গত ৬০ বছরে জাপানের সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড় মনে করা হচ্ছে এটিকে। টাইফুন হাগিবিসি দক্ষিণ-পশ্চিম টোকিওর ইজু উপদ্বীপে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার কিছুক্ষণ আগে আঘাত হানে। এখন জাপানের মূল দ্বীপের পূর্ব উপকূল ধরে এগিয়ে যাচ্ছে এটি। এই ঝড়ে বাতাসের গতি উঠেছে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২৫ কিলোমিটার। জাপানের সংবাদ সংস্থা এনএইচকে'র খবর অনুযায়ী দুই লাখ ৭০ হাজারের বেশি বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। কিয়োদো নিউজ এজেন্সি বলছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনের মৃতদেহ শনাক্ত করা গেছে। কিয়োদো'র খবর অনুযায়ী, ১১ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন এবং অন্তত ৯০ জন আহত হয়েছেন।

এই টাইফুন কতটা ভয়াবহ?
তীব্র বন্যা এবং ভূমিধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকায় ৭০ লাখের বেশি মানুষকে তাদের বাড়ি ছাড়তে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাপানের আবহাওয়া কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, "বিভিন্ন শহর এবং গ্রামে অতিরিক্ত মাত্রায় বৃষ্টি হওয়ায় জরুরি সতর্ক অবস্থা জারি করা হয়েছে।"

আবহাওয়া কেন্দ্রের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে টোকিও এলাকায় শনিবার এবং রবিবারের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত প্রায় আধা মিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। শনিবার টোকিওর অনেক এলাকায় বুলেট ট্রেন এবং মেট্রোর অনেক ট্রেন সেবা বন্ধ ছিল। টোকিওর হানেদা এবং চিবা'র নারিতা বিমানবন্দর মোট এক হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে। শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাগবি বিশ্বকাপের দু'টি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। টুর্নামেন্টের ৩২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ম্যাচ বাতিল করা হলো। শনিবারে জাপান গ্রাঁ প্রি'র ফর্মুলা ওয়ান কোয়ালিফাইং রেইসও স্থগিত করা হয়েছে। গত মাসেই টাইফুন ফাক্সাই জাপানের বিভিন্ন অঞ্চলে বাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে। ওই টাইফুনে ৩০ হাজারের বেশি বাড়ি ধ্বংস হয় যার অধিকাংশই এখনো মেরামত করা হয়নি।

টাইফুন সম্পর্কে আর কী জানা যাচ্ছে?
ফিলিপিনের তাগালগ ভাষায় হাগিবিস অর্থ 'গতি।' ১৯৫৯ সালে টাইফুন ভেরা'র পর থেকে এটিকেই জাপানের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় মনে করা হচ্ছে। টাইফুন ভেরার সময় বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ৩০৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ছিল এবং ঐ ঝড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ নিহত অথবা নিখোঁজ হন। স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরের মধ্যে পাওয়া ছবি এবং ভিডিও থেকে দেখা যায় অধিকাংশ নদীর তীরই প্লাবিত হয়েছে। টোকিওর আবাসিক এলাকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়া তামাগাওয়া নদীও এর মধ্যে রয়েছে। জাপানে বছরে ২০টির মতো টাইফুন হলেও টোকিও সাধারণত এত বড় মাপের ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় না।

সূত্র : বিবিসি