ফ্রান্সে মসজিদে হামলা,আহত ২ মুসল্লি

ফ্রান্সে মসজিদে হামলা,আহত  ২ মুসল্লি

ছবি:সংগৃহীত

ফ্রান্সে একটি মসজিদ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে উগ্র ডানপন্থি দল ন্যাশনাল ফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত ক্লাউডি সিঙ্কে নামের এক রাজনীতিক। এ সময় সে ওই মসজিদে থাকা দু’জন মুসল্লির ওপর গুলি চালায়। এ ঘটনায় মুসলিমদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। ফ্রান্স থেকে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়, ফ্রান্সে মেরি ল্যাঁ পেনের উগ্র ডানপন্থি দল ন্যাশনাল ফ্রন্টের হয়ে ২০১৫ সালে স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল ৮৪ বছর বয়সী কাউডি সিঙ্কে।

বেয়োনের মেয়র জ্যাঁ রেনে এচেগারে বলেছেন, সোমবার বিকেলে ওই মসজিদে যখন নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন দু’জন মুসল্লি এ সময় সেখানে হামলা চালায় অশীতিপর ওই সিঙ্কে। তিনি বলেন, হামলাকারী একটি গাড়িতে করে মসজিদ ভবনটির কাছে যায়। সেখান থেকে বিস্ফোরক একটি ডিভাইস মসজিদের সাইড দরজার ভিতর দিয়ে ছুড়ে মারে।

তখন মসজিদের ভিতরে থাকা দু’জন মুসল্লি বেরিয়ে আসেন। এ সময় সিঙ্কে তাদের ওপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ৭৪ ও ৭৮ বছর বয়সী ওই দু’জন মুসল্লির একজনের কাঁধে ও অন্যজনের বুকে, বাহুতে গুলিবিদ্ধ হয়। পুলিশ বলেছে, তাদেরকে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

কিন্তু হামলাকারীকে পুলিশ সনাক্ত করতে পেরেছে তার গাড়ির নাম্বার প্লেট দেখে। তাতে দেখা গেছে তার বাড়ি সেইন্ট মার্টিন ডি-সিগনাক্সে। বেয়োনে এলাকা থেকে ঠিক ১৬ কিলোমিটার দূরে এই এলাকায় প্রায় ৫০০০ মানুষের বাস। এ নিয়ে তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলেছেন, হামলাকারীকে ক্লাউডি সিঙ্কে হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সে গুলি করার দায় স্বীকার করেছে। এ ছাড়া মসজিদের বাইরে একটি গাড়িতে সে আগুন দিয়েছে।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। তিনি সোমবার সন্ধ্যায় এক টুইটে একে ‘হায়েনার’ হামলা বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, তার দেশ কখনোই ঘৃণাকে সহ্য করবে না। হামলাকারী বা হামলাকারীদের শাস্তি দেয়ার জন্য সব কিছু করা হবে। সবকিছু করা হবে মুসলিমদের সুরক্ষিত রাখতে। এটা আমার প্রতিশ্রুতি। অন্যদিকে এ ঘটনায় মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি ও সমর্থন প্রকাশ করেছেন ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফার ক্যাস্টনার। আর এই হামলাকে অবর্ণনীয় কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন মেরি ল্যাঁ পেন। তিনি বলেছেন, অবশ্যই আমাদের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই হামলা। তার দল বলেছে, সিঙ্কের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে তাদের যোগাযোগ নেই। তিনি এখন আর এ দলের সদস্য নন।

ওদিকে হামলার পর ওই মসজিদটি ঘেরাও করে রেখেছে তদন্তকারীরা। আর বোম্ব স্কোয়াডের একটি টিমকে পাঠানো হয়েছে সিঙ্কের বাড়িতে। মনোবিজ্ঞানীদের একটি টিমকে মোতায়েন করা হয়েছে ওই মসজিদে। সেখানে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে যে মানসিক ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে সে বিষয়ে দেখাশোনা করবে ওই দলটি। পুলিশ বলেছে, সিঙ্কের তিনটি আধা সামরিক মানের অস্ত্র ছিল। তদন্তকারীদের কাছে সে এ তথ্য দিয়েছে। ফ্রান্সের মাটিতে ইসলামপন্থি উগ্রবাদীদের হামলাবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুসলিমদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই এ ঘটনা ঘটে।