মেয়েদের শখের হাই হিলের জুতা ও স্বাস্থ্য ঝুকি!!

মেয়েদের শখের হাই হিলের জুতা ও স্বাস্থ্য ঝুকি!!

মেহেরুন নেসা

অনেক মেয়েরাই হাই হিলের জুতা পরতে খুবই পছন্দ করে। কারণ হাই হিলের জুতাতে নিজেকে বেশি ফ্যাশন্যাবল স্মার্ট, লম্বা এবং বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়। কিন্তু হাই হিলের জুতা অধিকাংশই আরামদায়ক নয় এবং দীর্ঘদিন লম্বা সময় ধরে হাই হিল ব্যবহারের ফলে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

হাই হিলের জুতা কেন ঝুঁকি পূর্ণ:

আমরা যখন হাই হিলের জুতা পরি তখন আমাদের মেরুদন্ডের আকৃতির স্বাভাবিক বিন্যাস বজায় থাকে না। আমাদের শরীরের অধিকাংশ ওজনই তখন পায়ের গোঁড়ালি দিয়ে না যেয়ে পায়ের পাতার সামনের দিকে স্থানান্তরিত হয়। অর্থাৎ আমাদের শরীরের ওজন বিন্যাস পদ্ধতিটাই নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পায়ের পাতার সামনের অংশ এবং পায়ের আঙ্গুলে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়। আমরা যখন হাই হিলের জুতা পরি তখন আমাদের শরীর অনেকটা সামনের দিকে ঝুঁকে যায়। বিশেষ করে কোমর এবং হাঁটু বেশি ঝুঁকে যায়। এই জন্যই কোমর ব্যথা সহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি হয়।

যে সকল জটিলতা দেখা দেয় :

  • পায়ের গোঁড়ালি ব্যথা       
  • পা মচকানো
  • পায়ের আঙ্গুলে ব্যথা         
  • কাফ মাসেল টাইট হওয়া 
  • পায়ে রগ টান লাগা          
  • মাংসপেশি বা রগ শক্ত হয়ে যাওয়া
  • হাঁটু ব্যথা ও কোমর ব্যথা   
  • আমাদের হাটা চলাফেরার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া
  • শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে মেরুদন্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ থেকে ঘাড় ব্যথা হতে পারে

কি করনীয়:

জীবন যাত্রার ধরন বদলান। খুব বেশি হাই হিলের জুতা পরার অভ্যাস ত্যাগ করুন। নরম স্লিপার বা আরামদায়ক জুতা পরতে হবে। প্রয়োজনে হিল কুশন বা কৃত্রিম আর্চ সমৃদ্ধ জুতা পরিধান করুন।​

  • পায়ে যদি ব্যথা থাকে তবে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট অথবা যে জায়গায় ব্যথা হবে সেখানে ১০-১৫ মিনিট নরম কাপড়ে বরফ রেখে ম্যাসাজ করুন।
  •  কিছু স্ট্রেচিং এবং স্ট্রেনদেনিং ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনার হাঁটু এবং পায়ের গোঁড়ালির মাংসপেশিকে শক্তিশালী করুন। যেমন-

            (ক) বিছানায় সোজা হয়ে বসে একটি তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতা সামনের দিকে টানুন এবং ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এটি ১০-১৫ বার করে দিনে ২/৩ বেলা করুন।

            (খ) একটি দেয়ালের সামনে বৃদ্ধাঙ্গুলের উপর ভর করে দাঁড়ান এবং ২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এটিও ১০-১৫ করে প্রতি দিন ২/৩ বেলা করুন।

এরপরও যদি ব্যথা থাকে তবে আপনি একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের শরনাপন্ন হোন।

সুস্থ্য থাকুন ও ভাল থাকুন। ধন্যবাদ।

মেহেরুন নেসা

ফিজিওথেরাপি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

আদ্-দ্বীন ব্যারিষ্টার রফিক-উল হক হাসপাতাল, ঢাকা।