বিএনপির এমপিদের শপথে সরকারের কোনো চাপ নেই : প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির এমপিদের শপথে সরকারের কোনো চাপ নেই : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়ার বিষয়ে সরকারের কোনও চাপ আছে কিনা এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা শপথ নিয়েছেন তারা স্বেচ্ছায় শপথ নিয়েছেন। এ নিয়ে সরকারের কোনও চাপ নেই। যারা তাদের নির্বাচিত করেছেন তারাই (জনগণ) শপথ নেওয়ার বিষয়ে তাদের চাপ দিচ্ছেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো  বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে গ্রেফতার করা হয়নি। আদালত দুর্নীতির কারণে তার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাও আওয়ামী লীগ সরকার করেনি। ১০ বছর আগে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।’

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) গণভবনে বিকাল ৪টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এসময় ব্রুনাই সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন তিনি। 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত নেতৃত্বে কে আসবেন তা দল ঠিক করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি একসময় অবসরে চলে যাবো। তখন দলে নতুন নেতৃত্ব আসবে। তবে কে নেতৃত্বে আসবেন তা ঠিক করবে দল। আওয়ামী লীগ ঠিক করবে যে, দলের নেতৃত্ব দেবেন কে। সেটা আমি ঠিক করবো না।’

আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানোর ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে দলটির প্রধান শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘তৃণমূল থেকে দলকে সম্মেলনের মাধ্যমেই ঢেলে সাজাতে হবে। একেকটি সম্মেলন আয়োজন করতে অনেক খরচাপাতি আছে। আয়োজনের ব্যাপার আছে। সামনে সম্মেলন হবে। কখনও কেউ আসে, কেউ চলে যায়, রাজনীতিতে এটা হয়।’

দলকে ডিজিটাল করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল থেকে শুরু করে দলের সবকিছু ডাটাবেজ করা হবে। আমি অবসর নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় চলে গেলেও স্যুইচ টিপে সব তথ্য পাবো।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানবিক কারণে যারা রোহিঙ্গাদের সেবা দিতে আসছেন, তারা নিজেদের সেবায় বেশি মনোযোগী হন। আমার ধারণা সমস্যা ওখানেই। অনেক সংস্থা এদের ভাসানচরে পাঠাতে চায় না। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাসানচরে ১০ লক্ষ রোহিঙ্গাকে সুন্দরভাবে রাখা যাবে। সুপেয় পানি, সেনিটেশনের ব্যবস্থা আছে। সাইক্লোন শেল্টার করে দিয়েছি। পর্যটনের ভালো ব্যবস্থা আছে। এদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেবো। এরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজেদের মধ্যেও সংঘাত করছে। বেকার থাকাটা খুব খারাপ দিক। খুব সহজে এদের জঙ্গিবাদের দিকে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। এদের হায়ার করা যেতে পারে। ৪০ হাজারের বেশি বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এগুলোও আমাদের দেখতে হয়।’

উল্লেখ্য, ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়ার আমন্ত্রণে ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল ব্রুনাই সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে দুই দেশের মধ্যে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং একটি বিনিময় নোট স্বাক্ষরিত হয়। ব্রুনাইতে এটাই ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর। এই সফরের ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সফরের প্রসঙ্গে ব্রিফ করার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী।