কোন আপেল বেশি পুষ্টিকর : লাল না সবুজ?

কোন আপেল বেশি পুষ্টিকর : লাল না সবুজ?

ছবি: সংগৃহীত

প্রতি দিন একটি করে আপেল খেলে ডাক্তারের প্রয়োজন পড়ে না, এই কথা তো ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। কিন্তু সেটা কোন আপেল? আমাদের চেনাজানা লাল আপেল, নাকি সবুজ আপেল? আপেলের অনেক গুণ। এর হাই ফাইবার, সহজে হজম হওয়ার ক্ষমতা, প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খাদ্যগুণ আপেলকে ফলের মধ্যে তাকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছে। তবে সবুজ আর লাল আপেলের মধ্যে তুলনা টানলে জিতবে কে?

আপেল এক প্রকারের ফল। এটি রোসাসি পরিবারের ম্যালিয়াস ডমেস্টিকা প্রজাতিভুক্ত। আপেল মূলত তার মিষ্টি স্বাদের জন্য জনপ্রিয়। সারা পৃথিবীব্যাপী আপেলের চাষ হয়ে থাকে এবং সবচেয়ে বেশি চাষকৃত প্রজাতি হচ্ছে জেনাস ম্যলুস । মধ্য এশিয়াকে আপেলের উৎপত্তিস্থল মনেকরা হয়, যেখানে এখনও তার পূর্বতন বুনো প্রজাতি ম্যলুস সিভেরসিকে দেখতে পাওয়া যায়। হাজার হাজার বছর ধরে এশিয়া এবং ইউরোপজুড়ে আপেলের চাষ হয়ে আসছে এবং ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারীদের মাধ্যমে লাতিন আমেরিকায় এর পদার্পণ হয়। অনেক সংস্কৃতিতে আপেলের ধর্মীয় এবং পৌরাণিক তাৎপর্য আছে, এদের মধ্যে নর্স, গ্রীক এবং ইউরোপীয়ান খ্রিস্টীয় ঐতিহ্য অন্যতম। সাধারণত আপেলের জাতগুলি মূলের কলমের মাধ্যমে তৈরি করা হয়, যা ফলস্বরূপ গাছের আকার নিয়ন্ত্রণ করে। আপেলের প্রায় ৭,৫০০ টির বেশি পরিচিত জাত রয়েছে।

লাল আপেল অনেক দিন ধরেই পরিচিত। আর অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম সবুজ আপেলের চাষ শুরু হয়। মারিয়া অ্যান স্মিথ নামে এক মহিলা প্রথম সবুজ আপেলের চাষ করায় এই ধরনের আপেলকে গ্র্যানি স্মিথ আপেলও বলা হয়। ফ্রান্সের ক্র্যাব আপেল এবং রোম বিউটির হাইব্রিড করে ১৮৬৮ সালে প্রথম সবুজ আপেল উত্‍পন্ন করা হয়। সবুজ ও লাল আপেলের মধ্যে পুষ্টিগুণ প্রায় এক। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সবুজ আপেলে খাদ্যগুণ বেশি থাকে। সবুজ আপেলে সুগার ও কার্বের পরিমাণ কম থাকে। অন্যদিকে ফাইবার, প্রোটিন, পটাসিয়াম, আয়রন ও ভিটামিন কে বেশি মাত্রায় থাকে।

তবে এই পার্থক্যটা খুবই সামান্য। কিন্তু লাল আপেলের সঙ্গে সবুজ আপেলের তফাত্‍ করিয়ে দেয় ভিটামিন এ। লালের তুলনায় সবুজ আপেলে দ্বিগুণ বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। তবে লাল আপেলে কিন্তু সবুজের থেকে অনেক বেশি পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। ভিটামিন এ বেশি থাকায় সবুজ আপেল দৃষ্টিশক্তি উন্নত, হাড়ের শক্তি বাড়ানো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কাজে বেশি উপকারী। তবে সবুজের থেকে লাল আপেল বেশি পাওয়া যায় বলে এটিই বেশি খাওয়া হয়ে থাকে। আর লাল আপেল খেলেও উপকার কিছু কম পাবেন না।

আপেলের শক্তিগুণ
আপেল একটু দামী হলেও এটি সত্যিই খুব উপকারী। আপেল আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধক করতে সক্ষম এবং পুষ্টিকর একটি ফল যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। আপেলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ লবণ, শর্করা, আঁশ, পেকটিন ও ম্যালিক এসিড। আপেলে শর্করা আছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ভিটামিনের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন—এ এবং ভিটামিন—সি। তবে ভিটামিনের উপস্থিতি আপেলের ছালে ও ছালের সাথে লাগানো মাংসল অংশেই বেশি। তবে মজার একটা কথা হলো যে, আপেলের মাংসল অংশের চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি ভিটামিন আছে আপেলের ছালে। খনিজ লবণের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ফসফরাস ও লৌহ। আপেলে সোডিয়ামের পরিমাণ খুবই সামান্য