সুনামগঞ্জে ভারতীয় পাতার বিড়ি , আসক্ত শিশুরা

সুনামগঞ্জে ভারতীয় পাতার বিড়ি , আসক্ত শিশুরা

ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের অবৈধ পন্থায় আসা ভারতীয় বিড়িতে সয়লাব দোয়ারাবাজারের হাঠ-বাজার। উপজেলার ছোট-বড় বাজার সহ গ্রামের দোকান গুলোতেও এই বিড়ি দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। যার কুফল ছড়িয়ে পড়ছে ‍এলাকার শিশুদের মাঝে। ধুমপায়ীরা সচেতন না হওয়ায় ‍এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।  এই অঞ্চলের বিরাট জনগোষ্ঠি ধুমপানজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগছে। এলাকার ধুমপায়ীরা এই বিড়ি সেবন করে থাকেন। দোয়ারাবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে এই নাসির উদ্দিন বিড়ি অবৈধভাবে এদেশে আসছে। জানা গেছে, প্রতিদিন সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার নাসির উদ্দিন বিড়ি চোরাচালানের মাধ্যমে আসে। তবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঝে-মধ্যে বিড়ির চালান আটক করে ।তবে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি বলে এটি বিক্রি কিংবা সেবন বন্ধ হচ্ছে না।

বড়দের দেখাদেখি ছোট বেলা থেকেই ‘পাতার বিড়ি’ সেবনে অভ্যস্থ ছোট ছোট শিশুরাও। যেকোন পরিবেশে ধুমপান করায় ‍এলাকার শিশুদের মাঝে ব্যাপক সারা পরেছে। তারা ‍এলাকার বিভিন্ন দোকান থেকে লুকিয়ে পাত‍া বিড়ি শেবন করে। মনা মিয়া নামের এক দিন মজুর বলেন-আমার বাবাও এই বিড়ি খেয়েছেন। মনা মিয়া প্রতিদিন তিন বান বিড়ি (তিন প্যাকেটে ৫ শলা) সেবন করার কথা উল্লেখ করে বলেন-এই বিড়ি সেবন না করলে আমার পেটে সমস্যা দেখা দেয়, টয়লেট হয়না এবং রাতে ভাল করে ঘুম হয়ও না। গ্রামের দোকান গুলোতে ‘পাতার বিড়ি’ বিক্রি হওয়ায় বড়দের দেখাদেখি ছোট-ছোট শিশুদেরও বিড়ি সেবনের আসক্তি দেখা গেছে।

জানা যায়,-দোয়ারাবাজার উপজেলার গ্রামাঞ্চলের ধুমপায়ীদের মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ‘পাতার বিড়ি’ সেবনে অভ্যস্থ। বৃটিশ আমল থেকে বংশানুক্রমে এই এলাকার ধুমপায়ীরা এটি সেবন করে আসছেন। ফলে দেশীয় বিড়ি কোম্পানী গুলো প্রতিবছর ব্যবসায়ীক ক্ষতি সহ সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে।

সীমান্তের চোরাকারবারী, পাইকারী বিক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের মাধ্যমে সাধারন ধুমপায়ীদের কাছে এটি সহজেই পৌছে দেয়া হয়। তাছাড়া পাতার বিড়ি চোরাই পথে আমদানী করতে সীমান্তে সৃষ্টি হয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। দু’দেশের সীমান্ত রক্ষিদের যোগসাজেসে এটি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। মাঝে-মধ্যে সীমান্ত রক্ষিদের হাতে ধরা পড়ছে অবৈধ পথে আসা বিড়ির চালান। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দোয়ারাবাজারের মাঠগাও, বাগানবাড়ি, পেকপাড়া, ঝুমগাও,কলাউড়া, শ্রীপুরসহ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে এই বিড়ি আসে। এর সঙ্গে যুগযুগ ধরে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন-যে কোন অবৈধ পন্যের বিক্রি বন্ধের ব্যাপারে আমরা সোচ্ছার। তবে, চোরাকারবারীরা সীমান্ত রক্ষিদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাতার বিড়ির চালান নিয়ে আসে। বিড়ির চালানের সন্ধান পেলেই সাথে-সাথে আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।