রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা মানসিক চাপে :টিআইবি

রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা মানসিক চাপে :টিআইবি

ছবি: সংগৃহীত

নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে কক্সবাজারের স্থানীয়রা মানসিক চাপে পড়েছে। তাদের কারণে স্থানীয়রা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশে অবস্থান : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে আসা এসব তথ্য তুলে ধরে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদেও কারণে স্থানীয়রা সংখ্যালঘু হয়ে পড়ছে। কারণ স্থানীয় অধিবাসী মোট জনসংখ্যা ৩৪ দশমিক আট শতাংশ আর  রোহিঙ্গারা ৬৩ দশমিক দুই শতাংশ। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে মোট চাহিদার ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবায় ব্যয় হচ্ছে। এতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়দের খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সামাজিক অবক্ষয়ের ঝুঁকি বৃদ্ধিসহ মাদক পাচার, নারী পাচার, পতিতাবৃত্তি  বৃদ্ধি পাচ্ছে।ফলে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, জমি দখলের মতো বিষয়গুলো বাড়ছে।

টিআইবি আরো জানায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ায় স্থানীয় জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিভিন্ন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।

অর্থনৈতিক ঝুঁকির বিষয়ে টিআইবি বলছে, অল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে স্থানীয়রা রোহিঙ্গাদের লবন চাষ, চিংড়ি হ্যাচারি, চাষাবাদসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করছে। ফলে রোহিঙ্গা শ্রমিকদের সহজলভ্যতার কারণে স্থানীয়দের কাজের সুযোগ কমে যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন পণ্যের হঠাৎ চাহিদা বাড়ায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা, মানবিক সহায়তায় নিয়োজিত কর্মী ও সরকারি কর্মকর্তাদের যানবাহন এবং ত্রাণবাহী ট্রাকের চলাচল ও চাপে রাস্তাঘাটের ক্ষতি ও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ৬ হাজার ১৬৪ একর বনভূমি উজাড়, জীববৈচিত্র ধ্বংস, ভূমি ধ্বসের ঝুঁকি, উখিয়া ও টেকনাফে ভূগর্ভস্ত পানির সংকট তৈরি হওয়া, হাতির চলাচলের পথ নষ্ট হওয়ার মতো বিষয়গুলোর কারণে কক্সবাজার পরিবেশগত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ।