যে সব বদ-অভ্যাসের কারণে মেরুদণ্ডের ক্ষতি হতে পারে

যে সব বদ-অভ্যাসের কারণে মেরুদণ্ডের ক্ষতি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটি (মেরুদণ্ড) নিজের অজান্তেই ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে না তো। অত্যন্ত জরুরি এই মেরুদণ্ডের যত্নে আমরা তেমন কোনো নজর দেই না। অথচ মেরুদণ্ডের সমস্যা হলে একজন মানুষ পঙ্গু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। প্রতিদিনের কাজ কর্মের কিছু ভুল বা বদ-অভ্যাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে মেরুদণ্ড। কী সেই ভুল বা বদ-অভ্যাসগুলো? আসুন জেনে নিই-

প্রথমটি হলো- একটানা বসে বসে কাজ করা। বিশেষ করে যারা ডেস্ক জব বা কম্পিউটারে কাজ করেন, তারা একটানা অনেকটা সময় বসে থাকেন। এর ফলে মেরুদণ্ডের ডিস্কের সমস্যা হতে পারে। তাই বসে কাজ করতে হলে মাঝে মধ্যে (৪০-৫০ মিনিট পরপর) অন্তত দুই-তিন মিনিটের জন্য হলেও হাঁটাহাঁটি করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় বদ অভ্যাসটি হলো বিশ্রাম নেয়ার হেরফের করা। শরীর ঠিক রাখতে হলে যথারীতি বিশ্রামেরও প্রয়োজন আছে। তবে অতিরিক্ত বিশ্রাম বা আলস্যের কারণেও কিন্তু মেরুদণ্ডের সমস্যা হয়ে যেতে পারে।

তৃতীয় বদ-অভ্যাসটি হলো- পিঠে অতিরিক্ত ভারী ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন করা। যারা নিয়মিত পিঠে ভারী বোঝাবহন করেন, তারা মধ্যবয়সের পর থেকে মেরুদণ্ডজনিত সমস্যায় পড়তে পারেন। বিশেষ করে স্কুল ছেলেমেয়েদের পিঠে অতিরিক্ত ভারী বইয়ের ব্যাগ দেয়া ঠিক নয়। এতে তাদের কাঁধে ও পিঠে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং পরে জীবনে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে।

চতুর্থ বদ-অভ্যাসটি হলো- রাতে ঘুমানোর ভঙ্গি। অনেকেই অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে কোমর ও পিঠ বাঁকিয়ে ঘুমান। এ ধরনের ভুল ভঙ্গিতে ঘুমানোর কারণেও মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পঞ্চম বদ-অভ্যাসটি হলো ঝুঁকে পড়ে কাজ করা। ক্ষেত খামারে যারা কাজ করেন, তাদের এই ভুলটি হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। এ ছাড়া ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া করার সময় টেবিলে ঝুঁকে বসে বা মোবাইলে ফেসবুকিং বা চ্যাটিং করার ক্ষেত্রেও অনেকে ঝুঁকে মোবাইল চালান। এতে মেরুদণ্ডের ওপর ভীষণ চাপ পড়ে। দীর্ঘ দিন ধরে একই ভঙ্গিতে একইভাবে কাজ করলে বা মোবাইল ঘাটলে মেরুদণ্ডের বড় কোনো কোনো সমস্যা হতে পারে। যে মহিলারা সেলাই বা পাটি বোনানোর কাজ করেন, একটু সচেতন না হলে তারাও মেরুদণ্ডজনিত নানা সমস্যায় পড়তে পারেন।

এ সব বদ-অভ্যাসের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে তাৎক্ষণিক কিছু কাজ আছে (যেমন, হুট করে খুব ভারী কোনো বস্তু পিঠে, কাঁধে বা মাথায় উঠানো চেষ্টা করা) যা হুজুগের বসে করতে গিয়ে অনেকেই মেরুদণ্ডের ক্ষতি করে ফেলেন। এ ছাড়া অসম বিছানায় বা অতি নরম বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাসের কারণেও হতে পারে মেরুদণ্ডের নানা সমস্যা। ছোটখাটো এই অভ্যাসগুলো সচেতনভাবেই আমাদের বদলে ফেলা উচিত। তা না হলে নিজের অজান্তেই মেরুদণ্ডের যেকোনো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে, যা পরে সহজে সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়ে ওঠে না।