কিসে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস?

কিসে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস?

ফাইল ছবি

চীনে মহামারীর আকার ধারণ করেছে রহস্যময় নতুন ভাইরাস নোভাল করোনাভাইরাস। চীনের বাইরে প্রায় সব মহাদেশেই এটা ছড়িয়ে পড়েছে।

এর সংক্রমণ হলে জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসের হার বেড়ে যাওয়া বা গলায় ঘা দেখা দেয়। প্রায় দুই দশক আগে ছড়িয়ে পড়া সিভিয়ার অ্যাকুইট রেসপিরেটরি সিনড্রোমস তথা সার্স ভাইরাসের মতোই প্রাণঘাতী এটা।

প্রতিদিনই নতুন নতুন আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ও মৃত্যুর মধ্যে চীনজুড়ে জোরদার করা হয়েছে প্রতিরোধ ব্যবস্থা। বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নতুন এই ভাইরাস কোথা থেকে আর কিভাবে ছড়াল সেটা খতিয়ে দেখছে চীনের স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা। এক্ষেত্রে দেশটির পশুপাখি ও এর ব্যবসা-বাণিজ্যকে অনুসন্ধানের কেন্দ্রে রেখেছেন তারা। এশিয়ার বেশিরভাগ দেশের মতোই চীনেও পশুপাখির ব্যবসায় প্রশাসনিক তদারকি খুবই দুর্বল।

করোনাভাইরাস বলতে এক গোত্রের অনেকগুলো ভাইরাসকে বোঝায়। বার্ড ফ্লু তথা সার্সের ভাইরাসও এই গোত্রের। ২০০২-এর নভেম্বর থেকে পরবর্তী আট মাসে চীন, হংকং, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে ৭৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোতেও প্রবল আতঙ্ক ছড়ায়। গন্ধগোকুল তথা ভাম ও গুহাবাসী বাদুড়কে এই ভাইরাসের উৎস বলে চিহ্নিত করা হয়। সঙ্গে স্পষ্ট হয়, চীনাদের যে কোনো পশু-পাখির মাংস খাওয়ার অভ্যাসই এর মূলে। ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল পশুপাখির বাজার থেকে।

চীনের পশুপাখির বাজারগুলোতে কুকুর, হাঁস-মুরগি, শূকর, সাপসহ বহু বন্যপ্রাণী পাওয়া যায়। মৃত বা জীবন্ত এসব প্রাণীর সঙ্গে একই স্থানে থাকে মানুষ। ফলে কোনো প্রাণীর জীবাণু বা ভাইরাস সহজেই মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে।

চীনা কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, নতুন করোনাভাইরাস মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশ উহান থেকে ছড়িয়েছে। মনে করা হচ্ছে, শহরের ‘হুয়ানান সিফুড মার্কেট’ থেকে সংক্রমণ ঘটেছে। যেখানে অনলাইনে অর্ডার করলেই ঘরে পৌঁছে যায় শেয়াল, কুমির, নেকড়ের ছানা, বড় স্যালামান্ডার, সাপ, ইঁদুর, ময়ূর, সজারু, উটসহ মোট ১১২ ধরনের প্রাণীর মাংস।

গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথম সংক্রমণের ঘটনার প্রায় এক মাস পর ১ জানুয়ারি বাজারটি বন্ধ করে দেয়া হয়। চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের পরিচালক গাও ফু বলেছেন, ‘ওই বাজারের বুনো পশুর মাংস থেকেই রোগটা ছড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।’ মার্কিন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সোসাইটির কর্তা সি ওয়ালজারের কথায়, ‘সংক্রামক যত নতুন রোগ দেখা যাচ্ছে, তার ৭০% আসছে বন্যপ্রাণী থেকে। তাদের মাংস থেকে।’