শিক্ষককে ‘ভাইয়া’ বলায় ছাত্রীকে থাপ্পড় দেওয়ার হুমকি

শিক্ষককে ‘ভাইয়া’ বলায় ছাত্রীকে থাপ্পড় দেওয়ার  হুমকি

ছবি:সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহকারী প্রক্টর ও উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের প্রভাষক হাফিজুল ইসলামের বিরদ্ধে এক ছাত্রীকে থাপ্পর দিয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। চিনতে না পেরে ‘ভাইয়া’ বলে সম্মোধন করলে তিনি এমনটি করেন বলে জানায় শিক্ষার্র্থীরা। গত মঙ্গলবার (২৮ জানুযারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের করিডোরে বাংলা বিভাগের এক ছাত্রীর সাথে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় সভাপতি ও প্রক্টর বরাবর লিখিত এক আবেদন পত্রে এ অভিযোগ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা যায়, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ১ম বর্ষের এক শিক্ষার্থী মোবাইল নিয়ে হেটে যাওয়ার সময় বাংলা বিভাগের সামনে দাড়িয়ে থাকা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের কিছু শিক্ষার্থীর সাথে থাক্কা লাগে। তখন দাড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় জানতে চায় ও তাকে ধমক দেয়। পরে সিনিয়রদের সাথে ভালো ব্যবহারে কথা বলতে বলে।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি সম্পর্কে অর্থনীতি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মুঠোফোনে অবগত করে। সে তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে বাংলা বিভাগের ওই শিক্ষার্থীদের ধমক দেয়। সাথে তাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে তাদের মা-বাবার নাম ও ফোন নাম্বার নেয়। সেইসাথে তাদেরকে অপমান করে ও জোর পূর্বক মোবাইলে ছবি ও ভিডিও নেয়। এতে ভয় পেয়ে যায় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এক শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।

ঘটনার এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন সহকারী প্রক্টর ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক হাফিজুল ইসলাম। তিনি ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন ছাত্রীকে ডাকেন। এক ছাত্রী বাসের সময় হয়ে গেছে ও ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে চলে যেতে চান। এসময় সহকারী প্রক্টরকেব চিনতে না পেরে ‘ভাইয়া’ বলে সম্বোধন করে ওই ছাত্রী। এতে তিনি রেগে যান ও হাত উঁচিয়ে থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। বারবার ক্ষমা চাওয়া সত্বেও ওই ছাত্রীকে অপমান করেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন তথ্য ও মোবাইল নম্বর নেন জানায় শিক্ষার্থীরা।

সিনিয়রদের দেওয়া হুমকি ও একজন দায়িত্বশীল শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণে শিক্ষার্থীরা নিরাাপত্তাহীনতায় ভূগছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়ে প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা ও বাংলা বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রক্টর স্যারের কথা মতো আমি সেখানে যাই। গিয়ে দেখি বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ বিভাগের এক শিক্ষার্থী কান্নাকাটি করছে। প্রক্টর স্যার ও ওদের বিভাগের সভাপতিদের নিয়ে বসে মিউচুয়াল করার জন্য উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীদের নাম, সেশন, বিভাগ, মোবাইল নাম্বার ও অভিবাবকদদের নাম লিখে নিয়ে আসি। আমাকে ভাই বলেছে তবে ওখানে রাগারাগি বা হুমকির মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ বলেন, ‘র‌্যাগিং প্রতিরোধের জন্য হাফিজুল ইসলাম ওই ভবনের দায়িত্বে আছেন। সিনিয়র-জুনিয়রের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি খবরে তিনি সেখানে যান।’ অভিযোগের ব্যপারে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পত্রটি আমি এখনো হাতে পাইনি। অফিসে হয়তো আছে ব্যস্ততার কারণে দেখা হয়নি। আগামী শনিবার আমরা বিষয়টি নিয়ে বসব।’