কিডনীর জন্য ক্ষতিকারক অভ্যাস

কিডনীর জন্য ক্ষতিকারক অভ্যাস

ফাইল ছবি

মানুষের দেহের কিডনী শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য। কিডনী শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থসমূহ মূত্রের মাধ্যমে বের করে দিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে। কিডনী মূলত: শরীরের ছাকনির কাজ করে। তাই কিডনী সুস্থ রাখা প্রয়োজন, শরীরকে সুস্থ্য রাখার স্বার্থে। অনেকে না জেনে এমনসব ব্যবহার করেন, যা কিডনীকে ক্ষতিগ্রস্থ করে পরিণামে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে ।

কিডনী সুস্থ রাখার জন্য দরকার পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি গ্রহণ না করলে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে যায়। ফলে কিডনীতে রক্ত প্রবাহ কমে যায়, যা কিডনীর কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। এর ফলে কিডনী শরীর থেকে ক্ষতিকর পর্দাথ বের করতে না পারার ফলে অনেক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায়। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক ৮-১০ গ্লাস পানি গ্রহণ আবশ্যক। অধিক পরিশান পানি গ্রহণও কিডনীর ক্ষতির কারণ হতে পারে। সব কিছুতেই ভারসাম্য প্রয়োজন। 

অতিরিক্তি পরিমাণে লবণ গ্রহণও কিডনীকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। চিপস ও ফার্স্টফুডে লবণের পরিমাণ থাকে বেশী। অনেকের খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবণ গ্রহনের অভ্যাস আছে। খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করা ৯৫ শতাংশ লবণ বের করে দেয় কিডনী। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ কিডনীকে অতিরিক্ত পরিশ্রমে বাধ্য করে। এর ফলে কিডনীর স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হয়। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ শরীরে পানি জমা করে,যার ফলে ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ব্লাড প্রেসারও কিডনীকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। কিডনী ফেইলিউরের অন্যতম প্রধান কারণ অতিরিক্ত ব্লাড প্রেসার। 

ধূমপান রক্তের ধমনীতে পরিবর্তন এনে কিডনীতে রক্ত সরবরাহ কমিয়ে দেয়, যার ফলে কিডনীর কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হয়। সমস্যাগ্রস্থ কিডনী কিংবা কিডনীর অন্যান্য অসুখকে ধূমপান প্রকট করে তোলে। গবেষণায় দেখা গেছে কিডনীর সমস্যার বা কিডনী ফেইলিউরের অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপান।

ব্যথানাশক ওষুধ আমরা আহরহ ব্যবহার করে থাকি বিভিন্ন কারণে। কিন্তু ব্যথ্যানাশক ওষুধও কিডনীর ক্ষতির কারণ হতে পারে। ব্যথানাশক ওষুধ এসপিরিন কিডনিতে রক্ত সরবরাহ কমিয়ে দেয়। এছাড়াও এই ওষুধ কিডনীকে ক্ষতিগ্রস্থ করে, বাধাগ্রস্ত করে এর কার্যক্রম। প্রতিবছর ৩% - ৫% নতুন কিডনী ফেইলিউরের কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ।
পর্যাপ্ত পরিমানে পানি গ্রহণ, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ না করা, ধূমপান বর্জন ও অতিরিক্ত ব্যথানাষক ওষুধ গ্রহণ না করার মতো অভ্যাসগুলোর মাধ্যমে আমরা শরীরের অত্যাবশ্যকীয় কিডনীকে সুস্থ ও সচল রাখতে পারি। এর ফলে আমরা অনেক অসুখ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।

ডা. মুহাম্মদ আব্দুস সবুর

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ