যে সকল ভূলের কারণে ক্যান্সার হতে পারে

যে সকল ভূলের কারণে ক্যান্সার হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

আমরা সবাই কম-বেশি স্বাস্থ্যসচেতন। তারপরও কিছু রুটিন কাজ থেকে শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে ক্যান্সারের বীজ। তবে অস্বাস্থ্যকর কিছু অভ্যাস বাদ দিলে ক্যান্সারের ভয় অনেকটাই কমে যায়।
ভারতের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সোমনাথ সরকার বলেন, ‘ক্যান্সারের নানা কারণ থাকে। তার মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে তা দৈনন্দিন অভ্যাস ও কিছু কাজের হাত ধরেও শরীরে প্রবেশ করে। শরীরে টক্সিক পদার্থের উপস্থিতি যত বাড়বে ক্যান্সারের ভয় ততই বড় আকার নেবে। তাই কিছু অভ্যাস কমাতে পারলে এ রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।’
দূষণের মধ্যে থাকা : বাসা-বাড়িতে ধুলাতে কোনোরকম প্রতিরোধক ছাড়া বসবাস করা। পরিবেশের দূষণ। এ সব থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে ক্যান্সার। দূষণের কারণে শরীরে কার্বনের নানা যৌগ জমে।
ই-সিগারেট ও ধূমপান : তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের পরিবর্তে অনেকেই ই-সিগারেট ব্যবহার করছেন। অনেকেই ভেবে থাকেন, এটি ব্যবহারের ফলে কম ক্ষতি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ই-সিগারেটেও সমান ক্ষতি হয়। সাধারণ বিড়ি-সিগারেট ও ই-সিগারেট- সব ক্ষেত্রেই শরীরে ঢুকে পড়ে তামাক ও কার্বন। ক্যান্সার দানাবাঁধার সবরকম উপাদান এতে রয়েছে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার : প্যাকেটবন্দী মাছ, গোশত, সস, বেকন, সালামি ও হ্যাম আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এগুলোকে গ্রুপ-১ কার্সিনোজেন ও গ্রুপ-২-এ কার্সিনোজেন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অত্যধিক পরিমাণে এসব খেলে ক্যান্সারের বীজ শরীরে ঢোকে।
গরম চা-কফি : খুব গরম চা বা কফি আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ক্যান্সারে’ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, খাদ্যনালীতে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে ফুটন্ত চা খাওয়ার প্রবণতা। যারা প্রায় প্রতিদিন ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রার চা পান করেন, তাদের এই ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় প্রায় দ্বিগুণ।
প্লাস্টিক : আমরা নিত্যপ্রয়োজনে প্লাস্টিক বিভিন্ন পাত্র ব্যবহার করে থাকি। ঘরোয়া দূষণের অন্যতম উৎস হলো এ প্লাস্টিক। প্লাস্টিকে বিসফেনল যৌগ থাকে। এই যৌগ খাদ্যদ্রব্য ও পানির সংস্পর্শে এসে সেগুলোকে দূষিত করে তুলতে পারে। এর ফলে প্রস্টেটের মতো অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে, গর্ভবতী মহিলাদের ভ্রƒণেরও ক্ষতি হয়।
চিনি ভেজে লাল : মাছ-গোশতের স্বাদ বাড়াতে আমরা তেলে চিনি ভেজে লাল করে নেই। গোশতের ঝোলে লালচে রঙ করার জন্য এটি খুব ব্যবহৃত পদ্ধতি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদ্ধতি অত্যন্ত মারাত্মক।
হেয়ার ডাই : চুলে রঙ করতে আমরা সাধারণত হেয়ার ডাই ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এ ডাই থাকে অ্যামোনিয়াসহ নানা ক্ষতিকর রাসায়নিক- যা চুলের ত্বকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। বাজার পাওয়া প্রায় সব ডাই ক্ষতিকর। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানিয়েছেন, এই ডাই থেকে স্তন ক্যান্সার ও ত্বকের ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে।
স্ট্রেস : আধুনিক জীবনে এই জিনিসটি বাদ দিয়ে দিন কাটে না। অথচ সব রকম লাইফস্টাইল ডিজিজকেই বাড়িয়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা নেয় এই স্ট্রেস। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্ট্রেস শরীরকে ভেতর থেকে ক্লান্ত করে ও কোষগুলোকে কমজোরি করে। ফলে কোষ দ্রুত ভাঙতে শুরু করে এবং শরীরকে ক্যান্সারের উপযোগী করে তোলে।

সূত্র: ইন্টারনেট।