কুষ্টিয়ায় চাচাকে হত্যায় ভাতিজার মৃত্যুদণ্ড

কুষ্টিয়ায় চাচাকে হত্যায় ভাতিজার মৃত্যুদণ্ড

ছবি:সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর হোগলা মহেন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুন্সী রবিউল ইসলাম হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৫ মার্চ) বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী জনাকীর্ণ আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলো- কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার দয়রাপুর এলাকার মৃত মুন্সী রেজাউল করিমের ছেলে এবং নিহত শিক্ষক মুন্সী রবিউল ইসলামের ভাতিজা মুন্সী মো. সোহাগ (৩৫)।
 
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার দয়রামপুর এলকার মৃত মজিবর এর ছেলে রাজু আহম্মেদ (৩৫), কোমরকান্দি এলাকার ইয়াকুব এর ছেলে রুবেল (৩৫) এবং দূর্গাপুর এলাকার হাতেম শেখের ছেলে আজাদ (৪০)।
 
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি রাত ১টার দিকে হোগলা মহেন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুন্সী রবিউল ইসলাম তার চাচাতো ভাই এর ইট ভাটার কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। ইটভাটার দায়িত্ব নেওয়া নিয়ে ভাতিজা সোহাগের সাথে বিরোধ চলে আসছিলো তার। এজন্য মোবাইলে বিভিন্ন সময়ে ঐ শিক্ষককে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিলো। ২৪ জানুয়ারি বাড়ি ফিরে বারান্দার গ্রিল এর তালা খুলে উক্ত মোটরসাইকেলটি বারান্দায় উঠানোর সময় একদল সন্ত্রাসীরা ডান কানের উপর দিকে মাথায় একটি গুলি ও ডান পাঁজরে একটি গুলি করে। গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় রবিউল ইসলামকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এ ঘটনায় পরদিন ২৫ জানুয়ারি নিহত রবিউল ইসলামের মা হাওয়া খাতুন অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমারখালী থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) এসএম আরিফুর রহমান ২০১৬ সালে ৩০ এপ্রিল চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

মামলার রাষ্ট্র পক্ষের কৌশুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী জানান, শিক্ষক রবিউল ইসলাম হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী তার আপন ভাজিতা মুন্সী মো. সোহাগের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ সন্দোহীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সবোর্চ্চ শাস্তি ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে মামলার অপর তিন আসামির অভিযোগ সন্দোহীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ বিজ্ঞ দিয়েছেন আদালত।