৪৫ দিন জামাতে নামাজ পড়ে সাইকেল পাচ্ছে সোনাইমুড়ীর ৪৩ শিশু-কিশোর

৪৫ দিন জামাতে নামাজ পড়ে সাইকেল পাচ্ছে সোনাইমুড়ীর ৪৩ শিশু-কিশোর

পুরস্কারপ্রাপ্ত কিশোর

নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী হামিদিয়া কামিল মাদ্রাসা মসজিদে ৪৫ দিন নিয়মিত জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করায় উন্নত ব্রান্ডের সাইকেল উপহার পাচ্ছেন উপজেলার ৪৩ শিশু কিশোর। 

গত ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখে হতে নেয়া মসজিদ কতৃপক্ষের এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে ছিলেন খতিব মুফতি হুমায়ূন কবির এবং অর্থায়ন করেছেন স্থানিয় বাসিন্দা ও সমাজ সেবক নুরুল ইসলাম নুরু।

জানা যায়, ভিন্ন রকম এই উদ্যোগ শুরু হয় গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। যার শেষ দিন ছিল শুক্রবার ২০ মার্চ পর্যন্ত। প্রথম পর্বে ৭০ শিশু-কিশোর নিবন্ধিত হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৪৩ জন টানা ৪৫ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায়ে সক্ষম হয়। সে অনুযায়ী আদায়কারীদের প্রতিজন একটি করে বাইসাইকেল পাবেন। তবে যারা নিয়মিত জামাতে নামাজ পড়তে পরেন নি তবে নাম লিখিয়েছিলেন তাদেরকেও কতৃপক্ষ সান্তনা পুরস্কার দিবে বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে অংশগ্রহণকারী ১২-১৩ বছর বয়সী এক কিশোর বলেন, "আমরা এতদিন নামাজ আদায় করেছি। একসাথে সবাই মসজিদে এসেছি। আমার সাথে অনেকের বন্ধুত্বও গড়ে উঠেছে। পুরস্কার পেলে আরও ভালো লাগবে। তবে এখন থেকে নিয়মিত মসজিদে আসব ইনশাল্লাহ।"

এমন ব্যাতিক্রমি উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মসজিদের খতিব মুফতি হুমায়ুন কবির বলেন, "আমার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল শিশু কিশোরদের মসজিদমুখী করার লক্ষে কিছু একটা করা। বহু প্রতীক্ষার পরে এই আয়োজনের শেষ প্রান্তে আমরা। মসজিদ কমিটি সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে এটি বাস্তবায়নে। আর্থিক সহায়তা দিয়ে বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছেন নুরুল ইসলাম নুরু ভাই। আমি করি এই উদ্যোগের ফলে অন্তত একটি ছেলেও যদি পরবর্তী জীবনে নামাজ আঁকড়ে ধরে! আমাদের এই উদ্যোগ সার্থক হবে।"

যে ৪৩ জন শিশু কিশোর নিয়মিত নামাজ পড়েছেন তাদেরকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাইসাইকেল উপহার দেয়া হবে আগামী শুক্রবার (২৭ মার্চ)। তবে তাদেরকে আগামী এক সপ্তাহ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে তাদেরকে পরিবর্তন এসেছে কিনা।

এমন সৃজনশীল ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ বাংলাদেশে এর আগে আয়োজিত হয়েছিল চাঁদপুরের একটি মসজিদে। এছাড়া ২০১৮ সালের মে মাসে মালয়েশিয়ার ক্যালানটানের একটি মসজিদ পবিত্র রমজান মাসে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে বাইক উপহার দিয়েছিল।

এর আগে ২০১৮ সালের জুলাইতে তুরস্কের কোন্যা পৌরসভা-কর্তৃপক্ষ ‘মসজিদে আসুন এবং আনন্দ করুনথ প্রকল্প চালু করে। এতে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের টানা ৪০ দিন ফজরের নামাজ আদায়ে উত্সাহ দিয়ে এমন উদ্যোগ নিয়েছিল।

২০১৮ সালে মিশরের আল-বাহিরা প্রদেশের একটি মসজিদ শিশুদের ফজরের নামাজে শরিক হতে উৎসাহিত করে একটি প্রতিযোগিতার ঘোষণা করেছিল। প্রতিযোগিতা শেষে যারা টানা ৪০ দিন মসজিদে নামাজ পড়তে পেরেছিল, তাদের প্রতিশ্রুত উপহার দিয়েছিল।

মূলত প্রথম এমন প্রতিযোগিতা-উদ্যোগের ধারণাটি আসে ইস্তাম্বুলের একটি মসজিদ-কর্তৃপক্ষের। ইস্তাম্বুলের ফাতিহ জেলার সুলতান সেলিম মসজিদ-কর্তৃপক্ষই ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম এধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল। তারা টানা ৪০ দিন ফজরের নামাজে অংশ নেওয়া বাচ্চাদের সাইকেল ও বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দিয়েছিল।