আজ সেই ভয়াল গণহত্যা দিবস

আজ সেই ভয়াল গণহত্যা দিবস

ফাইল ছবি

জাতি আজ স্মরণ করবে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ভয়াল কালরাত্রির কথা। ওই রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে যে গণহত্যায় মেতে উঠেছিল, তা শুধু এ দেশের নয়, সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে এক জঘন্য কালো অধ্যায়।

সে রাতে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকার ফার্মগেটে মিছিলরত বাঙালিদের নির্বিচার হত্যার পর পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনাসহ বিভিন্ন এলাকায় একযোগে হামলা চালিয়ে অসংখ্য বাঙালিকে হত্যা করেছিল তারা। বর্বরতার মর্মন্তুদ সেই কাহিনী সংক্ষেপে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। ২৫ মার্চের সেই গণহত্যার কথা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বই, ডকুমেন্টারি ও মিডিয়ায় প্রচারিত হলেও দীর্ঘ ৪৫ বছর দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের কোনো উদ্যোগ আমরা নিতে পারিনি।

আমরা ইতিপূর্বে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের জাতিসংঘ স্বীকৃতি আদায় করেছি। কূটনৈতিক তৎপরতার ফলেই তা সম্ভব হয়েছে। গণহত্যা দিবসের ক্ষেত্রেও আমাদের চালাতে হবে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা।

খোদ জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে ২৫ মার্চের গণহত্যার বহু নথিপত্র ও প্রমাণ রয়েছে। সেই কালরাতের প্রত্যক্ষদর্শী অনেক বিদেশি সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এখনও জীবিত রয়েছেন। সত্যের পক্ষে তারা এগিয়ে আসবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সঠিক পথে কার্যকরভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে পারলে গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সহজেই আদায় করা সম্ভব বলে মনে করি আমরা। এই দায় শুধু আমাদের নয়, সমগ্র মানবসভ্যতার।

বিশ্ববাসী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধসহ নানা নিষ্ঠুরতা সম্পর্কে জ্ঞাত রয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল সেই খবর এখনও বিশ্বের অনেকের কাছে অজানা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ওপর তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক অসংখ্য চলচ্চিত্র, লেখা হয়েছে বিভিন্ন ভাষায় উপন্যাস, কবিতা; তেমনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও তৈরি হতে পারে তেমন কিছু। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিললে সেই কাজগুলো সহজ হয়ে যাবে। আমরা চাই, আমাদের ওপর দিয়ে যে ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা চালানো হয়েছিল, সমগ্র বিশ্বই তার পুঙ্খানুপুঙ্খ ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত হোক।