কোয়ারেন্টিনের সময় অতিচঞ্চল ও বিশেষ শিশুকে যেভাবে শান্ত রাখবেন

কোয়ারেন্টিনের সময় অতিচঞ্চল ও বিশেষ শিশুকে যেভাবে শান্ত রাখবেন

ফাইল ছবি

আমরা সবাই করোনা-আতঙ্কে ঘরে বন্দী, বাইরে যাওয়া নিষেধ। স্কুলও বন্ধ। অটিজমে আক্রান্ত বা বিশেষ শিশুরা কি তা বুঝতে পারবে? এই বন্দিদশা তাদের পছন্দ না-ও হতে পারে। তারা বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে, অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। নিয়মিত থেরাপি, চিকিৎসাভিত্তিক স্কুল সত্ত্বেও এমনিতেই তাদের বাড়িতে নিয়ন্ত্রণ করতে অভিভাবকদের অনেক বেশি কষ্ট স্বীকার করতে হয়। এখন আরও বেশি সমস্যা হতে পারে। আসুন জেনে নিই তাদের বাড়িতে কীভাবে শান্ত রাখা যায় তার কিছু কৌশল।

১.
শিশুকে আপনার সামনে বসিয়ে তার কাঁধ থেকে হাত পর্যন্ত দুই হাতে এবং কোমর থেকে পা পর্যন্ত দুই পায়ে আপনার দুই হাত দ্বারা আরামদায়ক চাপ বা ডিপ প্রেশার দিন। শিশুর চোখ মুখ লক্ষ করুন; কোনো অবস্থাতেই যেন ব্যথা বা কষ্টদায়ক অনুভূতি না পায়। শিশুর বয়স ও মাংসপেশির গড়নের ওপর চাপের ধরন নির্ভর করবে। এভাবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে দিনে ৩-৪ বেলা ডিপ প্রেশার প্রয়োগ করুন।

২.
শিশুকে কম্বলে জড়িয়ে মেঝেতে গড়াগড়ি করতে বলুন বা আপনি গড়াগড়ি করান। এভাবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে দিনে ৩-৪ বেলা করুন। গড়াগড়ি করানোর সময় শিশুর দিকে প্রতি মুহূর্তে লক্ষ রাখুন কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না।

৩.
শিশুর দুই হাতে বা কাঁধে বা পিঠে শিশুর উপযোগী ভারী ব্যাগ দিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট ঘরের মধ্যেই হাঁটতে দিন।

৪.
শিশুকে পেছন থেকে বা সামনে থেকে জড়িয়ে ধরে হাগ করুন ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড, এভাবে ১৫-২০ বার প্রতি ঘণ্টা পরপর বা দিনে যতবার প্রয়োজন ততবার। করোনার বিষয়টি মাথায় রাখবেন। জড়িয়ে ধরা বা হাগ করার আগে অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নেবেন। দরকার হলে মাস্ক পরে নেবেন।

৫.
শিশুকে টানা ও ধাক্কা দেওয়ার কাজে (পুশ অ্যান্ড পুল) ব্যস্ত রাখুন। শিশুদের উপযোগী পরিশ্রম যেন হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ৫-১০ মিনিট দিনে ৩-৪ বার পুশ ও পুল করান।

৬.
শিশুকে উপুড় করে শুইয়ে কাঁধ থেকে পা পর্যন্ত বড় বল দিয়ে আরামদায়ক চাপ দিন। শিশুর চোখ ও মুখের দিকে খেয়াল রাখবেন যেন ব্যথা না পায়। এভাবে ৩-৫ মিনিট করে দিনে ৩-৪ বার বা যত বেশি প্রয়োজন ততবার করতে থাকুন। এ ছাড়া বলের ওপর উপুড় করে ও চিত করে শুইয়ে ধীরগতিতে দোলাতে পারেন।

৭.
শিশুকে ঘরের বিভিন্ন কাজ দিয়ে যতটুকু সম্ভব ব্যস্ত রাখুন। এসব কাজের মধ্যে হতে পারে কাপড় ভাঁজ করা, ময়দা মাখানো, কোনো কিছু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বহন করা, থালাবাটি ধোয়া বা অন্য কোনো শিশু উপযোগী কাজ। মনে রাখবেন, শিশুকে কোনো অবস্থাতেই অতিরিক্ত ফ্রি টাইম দেওয়া যাবে না। এতে তারা অশান্ত হয়ে ওঠে।

৮.
করোনার এই দুর্যোগময় মুহূর্তে শিশুকে যত বেশি শান্ত রাখতে পারবেন, তত বেশি আপনি ভালোভাবে তা মোকাবিলা করতে পারবেন। তা ছাড়া শিশুর শারীরিক উন্নতিগুলো ধরে রাখতে আপনাকে সব সময় ওপরের কাজগুলো চলমান রাখতে হবে।