শিক্ষক বহিষ্কার ও বিসিএস শিক্ষা সমিতির উদাসীনতা

শিক্ষক বহিষ্কার ও বিসিএস শিক্ষা সমিতির উদাসীনতা

প্রফেসর ড. শেখ মকছেদুর রহমান

করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত হয়ে ডাক্তারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ফেজবুকে লেখার জন্য সরকারি কলেজের দু'জন শিক্ষক ময়মনসিংহের জনাব কাজী জাকিয়া ফেরদৌসী ও বরিশালের জনাব সাহাদাত উল্লাহ কায়সার' কে বরখাস্তের ঘটনায় আমরা মর্মাহত। শিক্ষা প্রশাসন কতৃক বরখাস্তের এ অন্যায় আদেশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের জন্য মাননীয় শিক্ষামন্রী, মাননীয় শিক্ষা-উপমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরাম বিবৃতি দিয়ে এ অন্যায় আদেশ প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছে, এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে ফোরামকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এখন আমার প্রশ্ন হলো, সরকারি কলেজ শিক্ষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও যৌক্তিক দাবী আদায়ের সংগঠন 'বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি' নির্বিকার কেন? সমিতি কি কোন প্রতিবাদ করবে না? বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ ক্যাডাদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি কি এ অন্যায় আদেশ মেনে নিবে? যদি এ আদেশ প্রত্যাহারের জন্য সমিতি থেকে উদ্যোগ না নেয়া হয় তবে সমিতি থাকার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। সবাইকে যদি আমলাদের ভয়ে গা বাচিয়ে চলতে হয়, উচিৎ কথা বলতে ভয় লাগে তবে সংগঠনের দরকার কী? দু-একজন এ অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাচ্ছে, আমার দৃষ্টিতে এটা মোটেই পর্যাপ্ত নয়, সবাইকে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানাতে হবে।

যতদূর জানি শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাচ ভিত্তিক ফোরাম আছে কিন্তু কোন ফোরাম থেকেও কোন টু শব্দ নেই। ফোরাম কি শুধু নেতা সেজে ঢাকায় থাকার ধান্দায়? নাকি অন্য কোন উদ্দেশ্য?

মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয়কে বলছি, শুনেছি আপনার পদটি সচিবের পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়েছে। আপনার সাথে এ ব্যাপারে শিক্ষামন্রনালয় কতৃপক্ষের কি কোন আলোচনা হয়েছে? আপনি নিশ্চয় কলেজ শিক্ষক, তাই কলেজ শিক্ষকদের স্বার্থ দেখা উচিৎ। আপনাকে মেরুদন্ড শক্ত করতে হবে।

পরিশেষে বলতে চাই, বিসিএস ক্যাডার অফিসারদের শাস্তি দিতে হলে মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগে। নজিরবিহীন দ্রুততার সাথে শাস্তির আদেশ জারির পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার।

লেখক-

প্রফেসর ড. শেখ মকছেদুর রহমান,

ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ,

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।