করোনা নিয়ন্ত্রণে জাপানে এক মাসের জরুরি অবস্থা জারি

করোনা নিয়ন্ত্রণে জাপানে এক মাসের জরুরি অবস্থা জারি

ছবিঃ সংগ্রহীত

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মঙ্গলবার রাজধানী টোকিওসহ দেশের সাতটি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই জরুরি অবস্থা বুধবার থেকে কার্যকর হবে এবং আগামী একমাস বহাল থাকবে।

আগামী বুধবার থেকে দেশের মোট ৭টি এলাকায় এই জরুরি অবস্থা বলবৎ হবে বলে জানা গেছে। এলাকাগুলো হচ্ছে- টোকিও, ওসাকা, সাইতামা, কানাগাওয়া, চিবা, হিওগো ও ফুকুওকা।

জাপানে করোনা সংক্রামণ দেখা দেয়ার পর থেকেই বিভিন্ন চিকিৎসা ও আইন বিষয়ক কর্মকর্তারা এই ভাইরাস ঠেকাতে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এ ধরনের লকডাওন বা জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়ার কথা ভেবে গত ৩ সপ্তাহ ধরে এ নিয়ে নানা টানাপেড়েনে ভুগছিল জাপান সরকার।

কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ক্রমশঃ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় শেষমেষ মঙ্গলবার দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। আর এই জরুরি অবস্থা কমপক্ষে এক মাস বহাল থাকবে বলে জানা গেছে।

তবে জাপানের কিছু চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে বেশি সময় নিয়ে ফেলেছেন। অনেক আগেই তাদের এই ঘোষণা দেয়া উচিত ছিল।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার ফলে নির্দিষ্ট প্রদেশের গভর্নররা এখন স্কুল এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করার নির্দেশ দিতে পারবেন। যদিও নাগরিকদের বাড়িতে অবস্থান করার আদেশ দেওয়ার আইনি ক্ষমতা কর্তৃপক্ষের নেই। তবে প্রাদেশিক সরকারগুলো জরুরি অবস্থার সময় জনগণকে ঘরে থাকতে অনুরোধ করতে পারবেন।

জরুরি অবস্থার মধ্যে জাপানের ওই ৭ অঞ্চলে সব ধরনের শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে। তবে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের মতো সরকারের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকবে। আরও খোলা থাকবে ওষুধ ও খাবারের দোকান, ব্যাংক, সুপারমার্কেট ও পোস্ট অফিসের মতো প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান। এছাড়া দেশের গণ পরিবহণের ওপরও জরুরি অবস্থার কোনও প্রভাব ফেলবে না বলে জানা গেছে।

এমন এক সময়ে জাপানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলো যখন দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। দেশটিতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত করোনায় প্রায় ৪ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, মোট ৩৯০৬ জন। মারা গেছেন আরও ২৫২ জন। এদের মধ্যে সোমবার গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন সাতজন।
সূত্র: বিবিসি/দ্য জাপান টাইমস