একজন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

একজন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

ছবি সংগৃহিত।

 

 

সামরিক শাসক থেকে রাজনীতিক

 

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কর্মজীবন জীবন শুরু হয়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। ছাত্রজীবনেও তিনি রাজনীতির সংস্পর্শে আসেননি। মৃত্যুর আগে তার বড় পরিচয় ছিল তিনি একজন রাজনীতিবিদ। রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছেন, সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, সর্বশেষ ছিলেন একাদশ সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা। রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে রবিবার (১৪ জুলাই) সকাল পৌনে ৮টায় তিনি ইন্তেকাল (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগে ও ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের হত্যার কারণে বিএনপির নেতৃত্বে ধস নামে। ওই সময় দেশের রাজনীতিতে সংকট ও শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এই  সুযোগে রাজনীতিতে আসার সুযোগ পান এরশাদ। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জোটের রাজনীতির সমান্তরালে জাতীয় পার্টি গঠনের মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন এরশাদ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সামরিক শাসকের রাজনীতিবিদ হওয়ার প্রথম মডেল হচ্ছেন আইয়ুব খান। আমাদের দেশে এই মডেলটি প্রথমে অনুসরণ করেছেন জিয়াউর রহমান। সর্বশেষ সেই মডেলটি অনুসরণ করতে দেখলাম এরশাদকে। এই তিন ব্যক্তির রাজনীতিতে আসার ধরন একই রকম। অর্থাৎ, সেনাবাহিনীর কিছু লোক ক্ষমতা দখল করার পর সেনাপ্রধান এর কৃতিত্ব নিলেন এবং তার ইচ্ছা হলো—কৃতিত্বটাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য দরকার একটি রাজনৈতিক দল। আর এর জন্য সংবিধান সংশোধনসহ যা যা করা দরকার তাই করলেন এরশাদ।’

জাতীয় পার্টির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া জীবনবৃত্তান্তে বলা হয়েছে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। যদিও কোনও কোনও তথ্যমাধ্যম বলছে, এরশাদের জন্ম ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটায়। তবে এরশাদ নিজের আত্মজীবনীতে লিখেছেন তার জন্ম কুড়িগ্রামে মামা বাড়িতে।

জাতীয় পার্টির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেন এরশাদ। এরপর ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে অফিসার পদে নিয়োগ লাভ করেন তিনি। ১৯৬০-৬২ সালে তিনি চট্টগ্রামে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে অ্যাডজুট্যান্ট ছিলেন। ১৯৬৮ সালে শিয়ালকোটে ৫৪তম ব্রিগেডের ব্রিগেড মেজর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি লাভের পর ১৯৬৯-৭০ সালে তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে এবং ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এরশাদ পশ্চিম পাকিস্তানে আটকা পড়েন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে তিনি পাকিস্তান থেকে দেশে আসেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল পদে তাকে নিয়োগ করা হয়। ১৯৭৩ সালে কর্নেল এবং ১৯৭৫ সালের ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরই আগস্ট মাসে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান নিয়োগ করা হয়। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এরশাদকে সেনাবাহিনীর প্রধান করা হয় এবং ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যের হাতে নিহত হন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এর প্রায় ১০ মাস পর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের সরকারকে উৎখাত করে এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে দেশে সামরিক শাসন জারি এবং নিজেকে প্রধান সামরিক শাসক হিসেবে ঘোষণা দেন। এরপর ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এএফএম আহসানউদ্দিন চৌধুরীকে অপসারণ করে তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

রাজনীতিক হিসেবে এরশাদের প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেকটাই ক্যারিশমেটিক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়। ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পরে আওয়ামী লীগ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং ওই সময়ে তাদের (আ.লীগ) ক্ষমতায় থাকার প্রশ্নই ওঠে না। আর জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পরে বিএনপিরও একই অবস্থা হয়েছিল। ওই সময়ে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হয়, এর সুযোগ নিয়েছিলেন এরশাদ। এরপর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনৈতিক বৈধতার সুযোগ নিয়ে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন এরশাদ।’

 

জাতীয় পার্টির ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, ১৯৮৬ সালের পহেলা জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে পাঁচটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় পার্টি গঠনের ঘোষণা দেন এরশাদ। ১৯৮৬ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে এরশাদ পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণঅভ্যুত্থানের মুখে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

যদিও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জোটগত রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে চলে আসেন এরশাদ। ২০১৪ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনের সময় অনেকটা নাটকীয় ঘটনার মধ্যদিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তিনি ও তার দল। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ওই নির্বাচন বয়কট করায় একমাত্র এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিই ছিল ক্ষমতাসীনদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দশম জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে।

গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছাড়ার পর ১৯৯১ সালে এরশাদ গ্রেফতার হন। কারাগারে থেকেই ১৯৯১ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি রংপুরের পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে জিতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে বিএনপি। তৎকালীন সরকার এরশাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির মামলা দায়ের করে। একাধিক মামলায়  দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন।

 

১৯৯৬ সালের ১২ জানুয়ারি সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদ আবারও পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। এই নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ছয় বছর জেলে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি তিনি জামিনে মুক্ত হন। তবে আদালতের রায়ে দণ্ডিত হওয়ার কারণে সংসদে তার আসন বাতিল হয়ে যায়।

জোটগত রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে ২০০০ সালে জাতীয় পার্টিতে ভাঙন ধরে। দলটি তিন ভাগ হয়ে যায়। তবে জাপার মূল অংশটি সব সময় এরশাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন পার্টির সভাপতি। ২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন তিনি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে জয় লাভ করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির  নির্বাচনে জাতীয় পার্টি  আসন পায় ৩৪টি। এবার এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হন। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হন এরশাদ। বর্তমান সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

 

  এরশাদকে ছেড়ে গেছেন ঘনিষ্ঠরা 

 

১৯৮২ সালে ক্ষমতায় বসার চার বছর পর জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় ফ্রন্টের ধানমন্ডির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে ‘জাতীয় পার্টি’ (জাপা) গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। পাঁচটি শরিক দল এক হয়ে এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। এর চার বছর পর ’৯০ সালে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এরশাদ। এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে ‘এরশাদ যুগে’র।

তবে ’৯১ সালে দেশে আবারও সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু হওয়ার পর রাজনীতিতে গুরুত্ব বাড়তে থাকে তার। বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোটের রাজনৈতিক সমীকরণে জড়িয়ে যান তিনি। অবশ্য এই জোট-রাজনীতিতে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি হারিয়েছেন দলের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাকে, নিজের একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের। যাদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই ‘সুযোগ-সুবিধা’র প্রশ্নে পক্ষ ত্যাগ করেছেন।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, ১৯৮৮ সালে এরশাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ও দেখভাল করেছেন। এখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তিনি। ২০০১ সালে জোট সরকারে আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব প্রফেসর এমএ মতিন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এরশাদ সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ পরে নতুন জাতীয় পার্টি গঠন করেন। তবে তিনি অন্য কোনও দলে যোগ দেননি।

 

’৮৮ সালে এরশাদ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান।

জেপি’র আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ছিলেন এরশাদ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী। বর্তমানে তিনি মহাজোটে আছেন। গত আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ছিলেন।

১৯৮৬ সালে নবগঠিত জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। মহাসচিব নিযুক্ত হন অধ্যাপক এমএ মতিন। ৬০১ সদস্যের জাতীয় কমিটি গঠিত হয়। ৫৭ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব হন সাংবাদিক আনোয়ার জাহিদ। পরে তিনি ১৯৯৯ সালে ৪ দলীয় জোট গঠনে ভূমিকা রাখেন এবং বিএনপিতে সক্রিয় হন।

এরশাদ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। আওয়ামী লীগ ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তাকে স্পিকার নির্বাচিত করে।

জাপার দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠাকালে ফ্রন্টের শরিক দল জনদল, ইউপিপি, গণতান্ত্রিক পার্টি, বিএনপি (শাহ) এবং মুসলিম লীগ (সা) নিজেদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত ঘোষণা করে জাতীয় পার্টিতে একীভূত হয়। পরে ১৯৮৫ সালের ১৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি এরশাদের নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয় ফ্রন্ট গঠিত হয়। রাজনৈতিক দলের বাইরেও অনেক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও নেতা এই ফ্রন্টে যোগ দিয়েছিলেন। পার্টি গঠনের ঘোষণার দিনে তারাও জাতীয় পার্টিতে যোগ করেন।

জাতীয় পার্টি গঠনের দিন ২১ সদস্যের প্রেসিডিয়াম, ৫৭ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটিসহ ৬০১ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটির ঘোষণা দেওয়া হয়। ২১ সদস্যের প্রেসিডিয়ামের মধ্যে ১৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিজানুর রহমান চৌধুরী (আসেন আওয়ামী লীগ থেকে), মওদুদ আহমদ (আসেন বিএনপি থেকে, পরে আবার জাপা ছেড়ে বিএনপি), কাজী জাফর আহমেদ (পৃথক দল), সিরাজুল হোসেন খান, রিয়াজউদ্দিন আহমেদ ভোলা মিয়া, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (বিএনপিতে যোগ দেন), আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী।