আমার অনূভবে রমাদান- ১৪

আমার অনূভবে রমাদান- ১৪

ছবিঃ সংগ্রহীত

সবার মত আমিও ক্বদর রাতকে খুঁজছি। অনুধাবনের চেষ্টা করছি সেই মহাক্ষণকে- হেরার রশ্মিটি  যখন ঠিকরে পড়েছিল আমেনা দুলালের ললাটে আর জিবরিল আমীনের বুকে আলিঙ্গনের পর তিনি পড়তে পেরেছিলেন তাঁর পরম রবের নামে। আমি খুঁজছি নিষ্প্রভ দিবালোকের পরিবর্তে  আলোকময় এক মহিমান্বিত রাতকে- যা হাজার মাসের চেয়েও মর্যাদাবান।

লায়লাতুল ক্বদর অনুসন্ধানী হিসেবে ভাবছি- কিছু দেখার জন্য শুধু একটি ভালো চোখ হলেই চলবে না। প্রয়োজন হবে সে চোখে পরিমিত আলো। সে চোখটি নিশ্চয়-ই আমার চশমা/লেন্স পরাটি নয়। তাহলে কি হৃদয়ের চোখ (?) - সেটা তো জন্মান্ধের মত আমার পাষাণ হৃদয়ের বোঝা হয়ে আছে। আর পরিমিত আলোর যোগানতো আলকুরআন থেকেই আসবে। কিন্তু কিভাবে ! সে চিরচেনা কুরআন কারীম আমার কাছে আজো দুর্বোধ্য আর অচেনা-ই রয়ে গেছে। তাহলে দৃষ্টিহীন/ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন হৃদয়ের চোখ আলোহীন অবস্থায় কিভাবে সে মহিমান্বিত রাতকে খুঁজে পাব? তাহলে কি, বিগত বছরগুলোর মত এবারও আমার জীবনে ক্বদর অধরা-ই থেকে যাবে? বিজ্ঞানময় কুরআন কী করে আমার মত দৃষ্টিহীন, জ্ঞানহীন, অলস, অনুভূতিশূন্য এক অবিবেচক পাঠকের কাছে বাঙময় হবে, ধরা দেবে তার প্রত্যয়দীপ্ত ও প্রজ্ঞাময় দ্যুতি নিয়ে; আমার অন্তর-আত্মাকে ভাসিয়ে দেবে আলোর বন্যায়- স্বপ্ন দেখাবে এ ধূলির ধরাতে বসেই ঐ আরশে আজীমের মহান মালিকের সন্তুষ্টি আর চিরপ্রবাহমান নহরের আবাসনের? আর কিভাবেই, তুমি আমায় ক্বদর রাতের সাক্ষাত দেবে, সে রাতের সৌন্দর্য আর মর্যাদাকে উপভোগ করতে সুযোগ দেবে?

ও আমার জীবন-মৃত্যুর মালিক! ও আমার রব ! তোমার রহমত বঞ্চিত হওয়ার কথা আমি ভাবতেই পারিনি। আমি ক্বদরের এ দশকে জীবনকে ক্বদরময় করতে চাই। তা যেন হয়, বুকের চোখটির অন্ধত্ব ঘুঁচিয়ে আলকুরআনের পরিমিত আলোর আভায়। এ দশকের গোটা সময় ধরেই তোমার কিতাবের সাথে পরিচিত হতে চাই, আমাকে খঁজে পেতে চাই লওহে মাহফুজে সংরক্ষিত তোমার কিতাবে- যেখানে আমার কথা বলা হয়েছে ! যা প্রাণময় হয়েছিল তোমার প্রিয় হাবীব স. ও তাঁর প্রিয় সাথীগণ-এর জীবনে। যাঁর পরশে বেলাল, খাব্বাব, সুমাইয়া আর হামযা রা- অর্থপূর্ণ এক পবিত্র জীবনের পরিচয় খুঁজে পেয়েছিলেন নতুন করে। মূল্যবান হয়েছিলেন- দুনিয়া ও আখিরাতে সমানভাবে। (চলবে)
লেখক- ড. মীর মনজুর মাহমুদ