বরাবরই গুনীজনরা উপেক্ষিত এ দেশে!

বরাবরই গুনীজনরা উপেক্ষিত এ দেশে!

ছবিঃআবু জাফর

 বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কয়েকজন ক্ষনজন্মা মানুষ আজীবন অমর রবেন, তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে নবাব সলিমুল্লাহ অন্যতম! কিন্তু সবচেয়ে অপ্রিয় সত্য কথা হলো আমরা বরাবরই গুনীদের অবহেলা করি! আর ফলস্বরূপ আমাদের দেশে আর পূর্বের মত গুনীর দেখা মিলে না । ড. শহীদুল্লাহ তো বলেই গেছেন " যে দেশে গুনীর কদর নাই সেদেশে গুনী জন্মায় না" বিখ্যাত নবাব পরিবারে ১৮৭১ সালের ৭ই জুন স্যার সলিমুল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন। পিতা নবাব আহসান উল্লাহ গৃহশিক্ষক রেখে সলিমুল্লাহর শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর প্রথমে তিনি ১৮৯৩ সালে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিযুক্ত হন ময়মনসিংহে এবং ১৮১৫ সালে বিহারের মুজাফ্ফরবাদ ও ত্রিপুরায় দায়িত্ব পালন করেন। এবং ১৯০১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পিতা আহসানুল্লার মৃত্যুর দু’দিন পর জেষ্ঠ্য পুত্র বিধায় তিনি নবাব পদে অধিষ্ঠিত হন। সলিমুল্লাহ ১৯০২ সালে ‘কমান্ডার অব দ্যা স্টার অব ইন্ডিয়া' ও ১৯০৩ সালে ৭ম এডওয়ার্ড মুকুট পান ও তাকে রাজকীয় অনুষ্ঠানে “নবাব বাহাদুর” খেতাবে ভূষিত করা হয়। তা যে কোন ব্যক্তির জন্যই গর্বের বিষয়! তিনিই সে ব্যক্তি যিনি ১৯০৩ সালে বড় লাট লর্ড কার্জনকে পূর্ব বাংলার সমস্যাগুলো তুলে ধরেন! এমনকি বৃটিশদের বাণিজ্যিক স্বার্থ এবং নবাবের আবেদন যুক্ত হয়ে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে বাংলা বিভাজনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর প্রেক্ষিতে ১৯০৫ সালে পূর্ব বঙ্গ ও আসাম নিয়ে একটি স্বতন্ত্র প্রদেশ গঠন করা হয়। যদিও তার ৬ বছর পর ১৯১১ সালেই বঙ্গ ভঙ্গ রদ হয়ে যায়! প্রাচ্যের অক্সফোর্ড" ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়", বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়" বুয়েটে" , আর দেশের স্বনামধন্য "সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ" এগুলো সবগুলোরই প্রতিষ্ঠা কালীন প্রত্যক্ষ অবদান ছিল এই জাতীয় বীরের। বাংলাদেশের মানুষ এই কয়েকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এ যাপত কাল কত-শত গুনীজন পেয়ে তার ইয়াত্তা নাই। বের হওয়া গুনীজনদের জন্ম-মৃত্যুতে সারাদেশে সারা পড়ে গেলেও অনেকটা নিভৃতেই এসে চলে যায় তাদের কারিগর নবাব সলিমুল্লার জন্ম মৃত্যু । এমনকি এসব প্রতিষ্ঠানের চলমান শিক্ষার্থীগণ এটা নিয়ে মাথা ঘামায় না!ব জানার প্রয়োজনবোধও করে না। যা খুবই দুঃখজনক!

আবু জাফর

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়