পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ আলোচনায় রাজি যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ আলোচনায় রাজি যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া

ছবিঃ সংগ্রহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় রকমের একটি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে এ মাসেই আলোচনার জন্য উন্মুক্ত রাশিয়া। তবে সেই আলোচনায় চীনকে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেছে মস্কো। তারা বলেছে, এ উদ্যোগে চীনকে অন্তর্ভুক্ত করা হলে পুরো চেষ্টাই ভ-ুল হয়ে যেতে পারে। ‘নিউ স্টার্ট’ নামের ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ফেব্রুয়ারিতে। এ নিয়ে আগামী ২২ শে জুন ভিয়েনায় যুক্তরাষ্ট্রের দূত মার্শাল বিলিঙ্গস্লেয়ার সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভের। ওদিকে আন্তর্জাতিক বেশ কিছু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি ‘নিউ স্টার্ট’ নামের চুক্তির প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন।

এই চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া তাদের কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার অর্ধেক করতে সম্মত হয়েছিল।
চুক্তিটি সম্পাদিত হয়েছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অধীনে। কিন্তু এখন এটাকে তাজা করার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, নতুন আলোচনায় চীনকে সঙ্গে রাখা প্রয়োজন। কারণ, তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধি পেলেও এখনও তা রাশিয়া বা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তবে চীনকে সঙ্গে রাখার বিষয়ে মস্কো থেকে কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে রাশিয়ার অবস্থান পরিষ্কার করেছেন সের্গেই রিয়াবকভ। তিনি বলেছেন, চীনকে আলোচনার টেবিলে আনা উচিত হবে কি হবে না এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর হলো সম্ভাবনা ক্ষীণ। আরো পরিষ্কার করে বলা যায় ‘না’। এখন বিষয়টি নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। তবে তিনি এটা ইঙ্গিত দেন যে, চীনকে যদি যুক্তরাষ্ট্র আমন্ত্রণ জানায় তাতে বিরোধিতা করবে না রাশিয়া। উল্লেখ্য, জটিল ঐতিহাসিক সম্পর্ক সত্ত্বেও রাশিয়ার আন্তর্জাতিক মিত্র চীন। তাই সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেন, চীনকে আমন্ত্রণ জানালে তাদেরকে অবশ্যই বৈঠকের সঙ্গে একমত হতে হবে।
এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনকে আমন্ত্রণ জানায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র বৃটেন ও ফ্রান্সকেও আলোচনায় রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সের্গেই রিয়াবকভ। এ দুটি দেশের কাছে অল্প পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেও তাদের আলোচনায় রাখার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতিকে তিনি সুখবর বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, বল অংশত যুক্তরাষ্ট্রের কোটে।
উল্লেখ্য গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ওপেন স্কাইস ট্রিটি’ থেকে প্রত্যাহার করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এই চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য ৩২ টি দেশকে অল্প সময়ের নোটিশে আরেকটি দেশের ওপর দিয়ে ফ্লাইটের ওপর নজরদারি করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এ ছাড়া শীতল যুদ্ধ থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তি ‘ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি’ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে আগেভাগেই প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ট্রাম্প। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ওয়াশিংটন ভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল এসোসিয়েশনের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া প্রত্যেকের কাছে আছে কমপক্ষে ৬০০০ করে পারমাণবিক অস্ত্র। চীনের কাছে এ সময় ছিল ২৯০টি। এএফপি