গৃহবধূ মিতু হত্যার রহস্য উন্মোচিত ঃ নেশার টাকা না পাওয়ায় স্বামী শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মিতুকে

গৃহবধূ মিতু হত্যার রহস্য উন্মোচিত ঃ নেশার টাকা না পাওয়ায় স্বামী শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মিতুকে

প্রতিকী ছবি

পাবনা প্রতিনিধি:অবশেষে মিতু হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচিত। চারদিন আগে শনিবার (১৩ জুন) মধ্যরাতে ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় তাঁর মৃত্যু  হয়। এ মৃত্যু নিয়ে মানুষের মনে বিভিন্ন ধরণের প্রশ্ন জাগে। প্রশ্নের তীর যেতে থাকে তার নেশাখোর স্বামীর দিকে। যদিও স্বামীর পক্ষ থেকে বার বার উচ্চারিত হয় মিতু হার্ট আ্যাটাকে মারা গেছেন। কিন্তু মৃত মিতুর শরীরে আ্যটাকের আলামতের পরিবর্তে অন্য কিছুর আলামত সাদৃশ্য হয়। তাই প্রশ্নবিদ্ধ এ মৃত্যুকে নিয়ে পুলিশের তৎপরতা বেড়ে যায়। স্বামী জানিক হোসেন বাবুসহ বাড়ির কয়েকজনকে পুলিশ আটক করে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। বেরিয়ে আসে মিতুর মৃত্যুর আসল কাহিনী। স্বামী জাকির নেশার টাকা না পেয়ে একাই মিতুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর অন্যত্রে ফেলে রেখে ঘোষণা করে মিতু হার্ট আ্যটাকে মারা গেছে। ঈশ্বরদী থানা পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

পুলিশ জানায়, ১৩ জুন মধ্যরাতে ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের  চাঁদপুর গ্রামের রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় মৃত শহিদুল ইসলাম বাবলুর ছেলে জানিক হোসেন বাবুর (৩০) স্ত্রীর মিতুর মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জামিলুর নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এর মধ্যে খুনের সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের স্বামী জানিক হোসেন বাবু, শাশুড়ি হেনা বেগম এবং ভাসুরের স্ত্রী সুমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায়  নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে নিহতের স্বামী স্বীকার করে সে নিজেই স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।

নিহত গৃহবধূ কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার মোল্লাকান্দি গ্রামের মৃত মিজানুর রহমানের মেয়ে।

মিতু ঈশ্বরদী ইপিজেড-এর একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তাতে তিনি যে অর্থ পেতেন, তাঁর অধিকাংশই বাবু নেশাদ্রব্যের পেছনে খরচ করে ফেলতেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-ঝাটি হতো।

সংসারের খাবার জোগাতে গত শনিবার পিতার বাড়ি থেকে দুই হাজার টাকা আনেন। নেশাদ্রব্য কেনার জন্য স্ত্রীর কাছে বাবু ওই টাকা দাবি করেন। মিতু স্বামীকে টাকা না দেওয়ায় বাবু শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির জানান, বাবু  মাদকাসক্ত ও দুষ্ট চরিত্রের লোক। তিনি মিতু হত্যাকান্ডের কথা পুলিশের কাছে অকপটে স্বীকার করেছেন। থানায় স্বামী জানিক হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিকে আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য দু’জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।