আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার দাবি খন্দকার মাহবুব হোসেনের

আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার দাবি খন্দকার মাহবুব হোসেনের

প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন

সুরক্ষা নীতিমালা মেনে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রীমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য ভার্চুয়াল আদালত চলতে পারে না। এটি একটি অতি জরুরী বিধান, এটা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে না। দেশের বিচার ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক গতিতে চলতে না দিয়ে একদিকে যেমন বিচার প্রার্থী ও অপরদিকে আইনজীবিরা সংকটে পড়েছেন।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরায় নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, দেশে করোনা মহামারীর কারনে ২৬ শে মার্চ সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর ফলে দেশে বিচার ব্যবস্থায় স্থবিরতা চলে আসে। এই পরিস্থিতিতে ১১ই মে, ভার্চুয়াল কোর্টের বিধান আসে, যার আওতায় আইনজীবীরা সংশ্লিষ্ট আদালতে অনলাইনের মাধ্যমে মামলা দাখিল করার নির্দেশনা পায়। ইতোমধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে বিভিন্ন ধরনের মামলা পরিচালনার জন্য বেশ কয়েকটি বেঞ্চ গঠন করা হয়। এই সকল বেঞ্চে শুধুমাত্র অতীব জরুরী মামলা গ্রহন করার সিদ্ধান্ত হয়। করোনা মহামারী পূর্ব হতে হাইকোর্টের হাজার হাজার মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল এবং প্রতিদিন শত শত নতুন মামলা দায়ের হতো। ফলে আদালতের স্বাভাবিক বিচারকার্য বন্ধ হবার ফলে আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীগন এক নিদারুন অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। যা, কি-না ইতিমধ্যে চরম আকার ধারন করেছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভার্চুয়ালকোর্ট এর স্বাভাবিক সীমাবদ্ধতার কারণে, মামলার নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে হতাশাব্যঞ্চক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তদুপরি, প্রতিদিন বিশেষ করে শত শত ফৌজদারী মামলাসহ বিভিন্ন মামলা অনলাইনে শুনানীর জন্য দাখিল করা হয়। এর কোন ক্রমিক নাম্বার সংশ্লিষ্ট আদালত হতে আইনজীবিদেরকে দেওয়া হয় না। তার ফলে, মামলা শুনানীর ক্ষেত্রে তারা এক অজ্ঞাত পরিস্থিতির স্বীকার হন।

তিনি আরো বলেন, শোনা যায় মামলা দাখিল করার পর আদালতে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ অফিসার তালিকা করে বিচারকের নিকট শুনানীর জন্য উপস্থাপন করেন। বিচারক গুরুত্ব অনুযায়ী শুনানীর তারিখ নির্ধারন করেন। এ সমস্ত ক্ষেত্রে কথিতমতে সংশ্লিষ্ট আদালতের দুর্নীতির এক সুযোগ তৈরী হয়েছে। কেননা, মামলা দাখিলের কোন ক্রমিক নাম্বার না থাকায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সুবিধামতো তালিকা তৈরী করে। সে ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অর্থ অথবা প্রতিপত্তিই মামলা তালিকা আসা নির্ভর করে। ইতোমধ্যে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে অনলাইনে মামলা গ্রহণ করা বন্ধ রয়েছে। ওয়েবসাইটে মামলা দাখিলের নিয়ম থাকলেও অজ্ঞাত কারণে, তার কার্যকারিতা বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া ভার্চুয়াল কোর্টের আগাম জামিনের কোন সুযোগ না থাকায় দেশের সর্বত্র প্রতিদিন যে, শত শত মামলা দায়ের হয়, যার বেশীর ভাগই আক্রোশমূলক সেইসব মামলার আসামীরা গ্রেফতারের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য ঘর ছাড়া হয়, নতুবা অনৈতিক পদ্ধতিতে গ্রেফতার না হবার ব্যবস্থা করতে চরম হয়রানীর সম্মুখীন হয় বলেও জানান তিনি।