দুর্নীতি ও লুটপাট ওবায়দুল কাদেরের কাছে পূর্ণিমার আলো : রিজভী

দুর্নীতি ও লুটপাট ওবায়দুল কাদেরের কাছে পূর্ণিমার আলো : রিজভী

ফাইল ফটো

বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দুর্নীতি ও লুটপাটই হচ্ছে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের কাছে পূর্ণিমার আলো। তাদের ব্যর্থতার সমালোচনা শুনলেই সেটিকে তারা অন্ধকার বলে মনে করছেন। মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয কার্যালয়ে এক ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেছেন।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন ‘করোনার এই সঙ্কটেও আজগুবী তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে বিএনপি। পূর্নিমার রাতেও বিএনপি অমবস্যার অন্ধকার দেখতে পায়’। বিএনপি জাতিকে বিভ্রান্ত করছে না বরং জাতির সামনে প্রতিনিয়ত সঠিক তথ্য তুলে ধরছে বিএনপি। নিষ্কর্মার ঢেঁকি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অযোগ্যতা ও তার আত্মীয়স্বজন এবং ক্ষমতাসীনদের সিন্ডিকেটের দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্যসেক্টর ভেঙ্গে পড়েছে। করোনাসহ কোনো রোগেরই চিকিৎসা পাচ্ছে না মানুষ। করোনার টেস্ট না করিয়েই দেয়া হচ্ছে করোনার রিপোর্ট। বিনা চিকিৎসায় পথে ঘাটে মারা যাচ্ছে মানুষ। কবরস্থানে লাশ দাফনের জায়গা নেই। এখনো সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় ১০০ টাকার মধ্যে ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যায় হয় ৬৬ টাকা। আর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে তো ঘটি-বাটি, সহায়-সম্পদ সব খোয়াতে হয়।

তিনি বলেন, সরকার চিকিৎসার মতো মানুষের একটি মৌলিক অধিকারকে অগ্রাহ্য করে মেগা প্রজেক্ট নিয়েই ব্যাস্ত আছে। মানুষের জীবন মরণের প্রশ্নটি সরকারের কাছে কোনো মূল্য নেই। যারা জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে তারা জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলোকে কখনই আমলে নিবে না। তারা কালা কানুন দিয়েই জনগণকে বন্দী রেখে এক মনুষ্যত্বহীন কর্তৃত্ববাদী শাসনকে টিকিয়ে রাখতে চাইবে।

তিনি আরো বলেন, অভাবের তাড়নায় লাইন ধরে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ, ধার-দেনা করে কোনো রকমে জীবন যাপন করছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের মানুষরা। ব্যাংকগুলো লুট করে খালি করে দেয়া হয়েছে। এবারের কাল্পনিক বাজেটেও সরকারের টার্গেট হচ্ছে ব্যাংক থেকে ব্যাপক পরিমানে ঋন নেয়। এই ঋণ জনকল্যাণের কাজে ব্যবহৃত হবে না, এই ঋণ মেগা প্রজেক্টের নামে লুটপাটেই শেষ হয়ে যাবে। আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সকল সেক্টর। প্রতিদিন এসব খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। দুর্নীতি ও লুটপাটই হচ্ছে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের কাছে পূর্ণিমার আলো। তাই তাদের ব্যর্থতার সমালোচনা শুনলেই সেটিকে তারা অন্ধকার বলে মনে করছে।

 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এখন করোনার নমুনা পরীক্ষাও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। করোনার এই উচ্চ সংক্রমনের সময়ও কেন করোনা পরীক্ষা কমে গেল তার কি কোনো উত্তর দিতে পারবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। কয়েকদিন আগে ১৫-১৬ হাজার জনের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। এখন তা ১১-১২ হাজারে নেমে এসেছে, প্রায় ৪-৫ হাজার কমে গেছে। এর অর্থ সরকার জবরদোস্তিমূলকভাবে করোনার সংক্রমণ কম এটি জনগণকে দেখানোর জন্য করোনার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করছে। আওয়ামী লীগের মনস্তত্বে যেটি নেই তা হলো সততা, মর্যাদা, যোগ্যতা, সহানুভূতী, প্রাসংঙ্গিক অভিজ্ঞতা ও পরিকল্পনার সক্ষমতা। নিজেদের সর্ম্পকে উচ্চকিত ধারণা, চরম মিথ্যাচার, অনুশোচনাহীনতা, অগভীরতা, বিনা নির্বাচনে প্যারাসাইটের মতো ক্ষমতা আকড়ে রাখা, নিজের কাজের দায়িত্ব নিতে অপারগতা কিন্তু বাগড়াম্বরে অদ্বিতীয় আওয়ামী লীগ একটি আত্মপ্রেমজনিত বৈকল্য ভোগে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, যতোই একক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রকোপ বৃ্দ্ধি, গণতন্ত্র হরণ আর বিরোধী মত নিধন করেন না কেন- জনগণের অধিকারের পক্ষে আমাদের উচ্চারণ থামবে না।