আমাদের সমাজে প্রচলিত ঘৃণিত কাজ!

আমাদের সমাজে প্রচলিত ঘৃণিত কাজ!

ফাইল ছবি

 

আমাদের সমাজে কথা বলার মাধ্যমে মানুষ গীবত ও গালমন্দ করে থাকে। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়,মুখে, কলমে ,ইশারা-ইঙ্গিতে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে কারো অনুপস্থিতিতে তার এমন কোন দোষের কথা আলোচনা করা ,যা শুনলে সে মনে কষ্ট পেতে পারে তাকে গীবত বলে। যদি এমন কোন দোষের কথা আলোচনা করা হয়, যা আদৌ উক্ত ব্যক্তির মধ্যে নেই। তবে সেটা গীবত নয় বরং অপবাদ। আর এসব কিছুই আমাদের সমাজে বিদ্যমান বা প্রচলিত। আমরা একজনের কথা অন্যজনের কাছে প্রকাশ করে থাকি। যা মোটেও কাম্য নয়। আল কোরআন ও হাদিসে এসব ব্যাপারে অনেক আলোচনা রয়েছে। পবিত্র আল কুরআনে গীবত ও গালমন্দের ব্যাপারে ইরশাদ হয়েছে যে,

                         *হে মুমিনগণ, তোমরা বেশি ধারণা ও অনুমান করা থেকে বিরত থাকো। কারণ কোন ধারণা ও অনুমান করা গুনাহের কাজ এবং দোষ অন্বেষণ করো না। আর তোমাদের কেউ যেন গীবত না করে। এমন কেউ কি তোমাদের মধ্যে আছে যে তার নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে?? অথচ তোমরা তা অপছন্দ করো। সুতরাং ,আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী ও পরম দয়ালু।

                                     ( সূরা আল হুজরাত: ১২)

আল্লাহ অন্য আয়াতে গালমন্দ সম্পর্কে বলেছেন,

                           *আল্লাহ মন্দ কথা প্রকাশ করা ভালোবাসেন না তবে কারো উপর জুলুম করা হয়ে থাকলে অন্য কথা। জেনে রাখ, আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন।

                        (সূরা নিসা :১৪৮)

গীবত বা পরনিন্দা এর ব্যাপারে হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে যে, হযরত আবু সাঈদ( রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল(সাঃ)বলেছেন, গীবত হলো ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক। তখন সাহাবীরা বলতে লাগলো, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) গীবত কি করে ব্যভিচারের চেয়ে মারাত্মক?? তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, কোন ব্যক্তি যদি যেনা করার পর তওবা করে, আল্লাহ তার তাওবা কবুল করেন। কিন্তু গীবতকারীকে যার গীবত করা হয়েছে ,সে যদি মাফ না করে তাহলে আল্লাহ মাফ করবেন না।(বায়হাকি)

           *গীবতের কাফফারাঃ

                                গীবতের কাফফারা ব্যাপারে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, গীবতের কাফফারা হলো এই যে,তুমি যার গীবত করেছো তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করবে। (হে আল্লাহ তুমি আমার এবং তার গুনাহ মাফ করে দাও।) (বায়হাকি)

দুনিয়াতে গীবতের সবচেয়ে বড় কুফল হচ্ছে, মানুষের মধ্যে একতা বিনষ্ট হয়। প্রত্যেকের অন্তরে অন্যের প্রতি সন্দেহ ও অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়। ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বিলুপ্ত হয়। ফলে, সমাজ ও রাষ্ট্রে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা পূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সুতরাং, আমাদের প্রত্যেকের উচিত ঘৃণিত কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা এবং একে অপরের জন্য মঙ্গল কামনা করা।

মু, সায়েম আহমাদ

শিক্ষার্থী,

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ।

ঢাকা কলেজ, ঢাকা।