জিএম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান মানেন না রওশন

জিএম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান মানেন না রওশন

জিএম কাদের ও রওশন এরশাদ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসাবে জি এম কাদেরকে মানতে রাজি নন রওশন এরশাদ। সোমবার  গণমাধ্যমে পাঠানো সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতার প্যাডে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি দাবি করেছেন, যথাযথ কোনও ফোরামে আলোচনা না করেই জি এম কাদেরকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বিবৃতিতে পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরবর্তী চেয়ারম্যান না হওয়া পর্যন্ত জি এম কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন রওশন। এতে তাকে সমর্থন জানিয়েছেন সাত জন সংসদ সদস্যসহ দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্য।

জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ। দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৪ জুলাই মারা যান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এর আগে গত জুনে শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরকে  দায়িত্বভার অর্পন করেন তিনি। বিষয়টি তাৎক্ষণিক মেনে নিলেও এরশাদের মৃত্যুর চার দিনের মাথায় গত ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) জাতীয় পার্টির মহাসচিব জি এম কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থেকে চেয়ারম্যান হিসেবে গণমাধ্যমের সামনে পরিচয় করিয়ে দেন। আর এর পাঁচ দিন পরেই তাকে চেয়ারম্যান পদে মানতে আপত্তি জানালেন রওশন এরশাদ ও তার অনুসারীরা।

সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার প্যাডে হাতে লেখা এই বিবৃতিতে  জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ লিখেছেন, ‘‘সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের মারফত আমরা জানতে পেরেছি জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে যা আদৌ কোনও যথাযথ ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দায়িত্বপালনকালে জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র ধারা ২০ (২) এর খ-এ দেওয়া ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। যথা-‘মনোনীত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রেসিডিয়ামের সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতামতের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করবেন। চেয়ারম্যানের অবর্তমানে ধারা ২০ (২) এর ‘ক’ কে  উপেক্ষা করা যাবে না।

আশাকরি বর্তমানে যিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরবর্তী চেয়ারম্যান না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।’’

বিবৃতিতে দলের সব নেতা-কর্মীকে গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

বিবৃতিতে এ ঘোষণার প্রতি একমত পোষণকারী আরও সাতজন সংসদ সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্যের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন-প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম ওসমান এমপি, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, রওশন আরা মান্নান এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন জাহান রত্না এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ,  ও প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।

এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির বিরোধ আবার প্রকাশ্য রুপ পেলো। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি থাকতে হয় তাকে। নির্বাচনে না গিয়ে টানা পাঁচ বছর সংসদের বাইরে ছিলেন জি এম কাদের। আর সংসদে বিরাধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেন রওশন এরশাদ। আর হাসপাতালের শয্যায় থেকেও নির্বাচিত হয়ে পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ছিলেন এরশাদ।