লঙ্কানদের হারিয়ে সফরের শুভ সূচনায় বাংলাদেশ

লঙ্কানদের হারিয়ে সফরের  শুভ সূচনায়  বাংলাদেশ

ছবি সংগৃহিত।

 

দারুণ জয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে শুভ সূচনা করল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে শানাকা ঝড়ে বাংলাদেশকে ২৮৩ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দেয় লঙ্কান প্রেসিডেন্ট একাদশ।

পরে ব্যাট করে টাইগার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিথুন ও মুশফিকুর রহিমের অর্ধশতকের সুবাধে ৪৮.১ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

কলম্বোর সারা ওভালে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে বাংলাদেশকে দারুণ  শুরু এনে দেয় পেসার রুবেল হোসেন।

বোলিংয়ে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে তৃতীয় বলেই শ্রীলঙ্কা ওপেনার ডিকভেলাকে শূন্য রানেই বিদায় করে দেন রুবেল। ১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় লঙ্কানরা। পরবর্তীতে ব্যাটিংয়ে নামা ফার্নান্দোকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি রুবেল। ইনিংসের সপ্তম ওভারে ব্যক্তিগত ২ রানেই তাকে ফিরিয়ে দেন এই পেসার। এরপর আরেক পেসার তাসকিন ফেরান একদিক আগলে রাখা ওপেনার ও অধিনায়ক গুনাথিলাকাকে। ব্যক্তিগত ২৬ রানে তাকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম শিকার করেন তাসকিন।

এরপর দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৮২ রানের জুটি গড়েন জয়াসুরিয়া ও রাজাপাকসে। তবে আক্রমনে এসেই নিজের প্রথম ওভারর ৩২ রান করা রাজাপাকসকে ফেরান সৌম্য সরকার। আর এর পরের ওভারেই ৭ রান করা পেরেরাকে ফেরান মোস্তাফিজ। উইকেটে থিতু হয়ে দারুন ফিফটি হাকানো শানান জয়সুরিয়াকে ফিরিয়ে আবারো ব্রেক থ্রু এনে দেন সৌম্য। তবে শেষদিকে দাশুন শানাকা ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটে ২৮২ রান করে লংকান প্রেসিডেন্ট একাদশ দলটি। সানাকা ৬৩ বলে ৬ ছক্কা ও ৬ চারে ৮৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

বাংলাদেশের পক্ষে রুবেল, সৌম্য ২ টি, তাসকিন ও মোস্তাফিজ একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

টস হেরে বোলিংয়ে যেমন ভালো শুরু করেছিল বাংলাদেশ, ব্যাটিংয়েও তেমন শুরু করেছিলেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ৯ ওভারের মধ্যে ৪৫ রান তুলে ফেলেছিল এ ওপেনিং জুটি। কিন্তু পরের ওভারেই ছন্দপতন। শ্রীলঙ্কা বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের পেসার কাসুন রাজিথা তুলে নেন সৌম্যকে। ২৪ বলের ইনিংসে দুই চারে ১৩ রানে আউট হন এ ওপেনার। এরপর তামিম ইকবালও ফিরে গেলে উইকেটে জুটি বেঁধেছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। তৃতীয় উইকেটে মিঠুনের সঙ্গে ৭৩ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন মুশফিক।

শুরুতে তামিম ইকবাল বিশ্বকাপের হতাশা কাটিয়ে দিচ্ছিলেন ছন্দে ফেরার আভাস। কিন্তু ১৪তম ওভারে তাকে রাজিথার ক্যাচে পরিণত করেন লাহিরু কুমারা। ৪৭ বলে ৩৭ রান করে ফিরেছেন তামিম। ৬টি চারের এ ইনিংস দিয়ে তামিম ছন্দে ফেরার প্রতিশ্রুতি দিলেও আশা পূরণ করতে পারেননি।

বাংলাদেশের ইনিংসের মাঝপথে মানে ২৫তম ওভারের শেষ বলে দাসুন শানাকাকে ক্যাচ দেন মুশফিক। উইকেটে সেট হয়ে বড় ইনিংস খেলার আভাস দিচ্ছিলেন এ ব্যাটসম্যান। সেটি সেঞ্চুরির লক্ষ্য হলেও যেতে পেরেছেন অর্ধেক পথ। ৪৬ বলে ৫০ রানে আউট হয়ে ফিরেছেন মুশফিক। ৬ চার ও ১ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান তিনি।

অন্যদিকে ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামা মোহাম্মদ মিথুনের ব্যাট ছিলো সচল। দেখে শুনে খেলে সেঞ্চুরির পথেই হাঁটছিলেন তিনি। কিন্তু ‘নার্ভাস নাইনটি’তে গিয়ে ব্যর্থ হলেন এই মিডল অর্ডার। ডি সিলভাকে ক্যাচ দিয়ে রাজিথার বলে ফেরেন তিনি। ১০০ বল মোকাবেলা করে ৯১ রান আসে তার উইলো থেকে। ১১ চার ও এক ছয়ে এই ইনিংসটি সাজান।

এরপর মাহমুল্লাহর ৩৩, সাব্বিরের ৩১ ও মোসাদ্দেকের অপরাজিত ১৫ রানের ওপর ভর করে ১১ বল হাতে রেখে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। 

লঙ্কান প্রেসিডেন্ট একাদশের বোলারদের মধ্যে লাহিরু কুমারা ২টি, ডি সিলভা ও রাজিথা একটি করে উইকেট শিকার করেন।

চলতি মাসের ২৬ তারিখ থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ হবে ২৮ ও ৩১ তারিখে।