পবিত্র কাবায় নতুন গিলাফ স্থাপন করা হবে বৃহষ্পতিবার

পবিত্র কাবায় নতুন গিলাফ স্থাপন করা হবে বৃহষ্পতিবার

ঐতিহাসিক সূত্রে বলা হয়েছে, হজরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম প্রথম পবিত্র কাবা শরিফ গিলাফ দিয়ে আচ্ছাদন করেন।

করোনা মহামারির কারণে এবারে সীমিত পরিসরে ১০ হাজার ব্যক্তির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পবিত্র  হজ। বাৎসরিক নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর হজের মওসুমে কাবা শরিফে স্বর্ণখচিত কুরআনিক ক্যালিগ্রাফির নতুন কালো গিলাফ পরানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও আগামী বৃহস্পতিবার হজের দিন পবিত্র কাবা ঘরে  নতুন গিলাফ পরানো হবে। শুক্রবার এ ঘোষণা  দেন কাবা শরিফের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক শায়খ ড. আব্দুর রহমান আস সুদাইসি। সৌদি আরবের সরকারী দৈনিক  সৌদি গেজেট এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবছরই নির্দিষ্ট সংখ্যক শিল্পী বছরব্যাপী একান্ত  শ্রম ও প্রচেষ্টায় এ নতুন গিলাফ তৈরি করে থাকেন। মক্কার উপকন্ঠে স্থাপিত কাবার গিলাফ তৈরির কারখানায় এ গিলাফ তৈরি করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে কাবা শরিফের এ নতুন গিলাফ ইতিমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 কাবা শরিফ ও মদিনার মসজিদে নববির প্রধান ইমাম ও খতিব শায়খ ড. আব্দুল আজিজ বিন আবদুর রহমান আস-সুদাইসি এ গিলাফ গ্রহণ করেন। নিয়ম অনুযায়ী  বৃহস্পতিবার কাবা শরিফে নতুন গিলাফ পরানো হবে। বৃহস্পতিবার ১৬০ জন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞ কারিগর ও প্রযুক্তিবিদ পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফ পরিবর্তন করে নতুন গিলাফ পরানোর কাজে অংশগ্রহণ করবেন। এ প্রক্রিয়াটি প্রতি বছর ৯ জিলহজ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

প্রতি বছরের এ দিনটিতে হজে অংশগ্রহণকারীরা আরাফাতের ময়দানে হজের আনুষ্ঠানিকতায় নিমগ্ন থাকেন। আর পবিত্র কাবা শরিফ নতুন কিসওয়ায় সজ্জিত হয়। হজের কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসা হাজিরা দেখতে পান নতুন গিলাফে সজ্জিত পবিত্র কাবা শরিফ। কাবা শরিফের কিসওয়া তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ৬৭০ কেজি খাঁটি সিল্ক। যা কালো রঙের হয়। ১২০ কেজি সোনায় মোড়ানো সুতা। ১০০ কেজি রূপার সুতা। ৪৭ খন্ডে বিভক্ত এ গিলাফে কাবা শরিফের চারদিক আবৃত করে দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, মক্কার নিকটবর্তী উম্মুল জুদ এলাকায় কাবার গিলাফ তৈরির একটি কারখানা  রয়েছে। যেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ শ্রমিক সারা বছর এই কাবার গিলাফ তৈরির কাজে নিয়োজিত থাকেন।পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফ তৈরিতে প্রায় ৫.৮ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়। আর পুরোনো গিলাফকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে বিভিন্ন দেশের ইসলামিক স্কলার, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাষ্ট্রপ্রধানদের উপহার হিসেবে দেয়া হয়।

কাবা শরিফ এ গিলাফ দিয়ে আচ্ছাদন কখন বা কার উদ্যোগে শুরু হয়- সে সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক সূত্রে বলা হয়েছে, হজরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম প্রথম পবিত্র কাবা শরিফ গিলাফ দিয়ে আচ্ছাদন করেন। ভিন্ন আরেকটি বর্ণনায়  আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্বপুরুষ আদনান ইবনে আইদ পবিত্র কাবা শরিফ প্রথম গিলাফ দিয়ে আচ্ছাদিত করেন। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিকের বর্ণনা অনুযায়ী, হিমিয়ারের রাজা তুব্বা আবু বকর আসাদ পবিত্র কাবা শরিফ গিলাফের মাধ্যমে আচ্ছাদনকারী  প্রথম ব্যক্তি। কাবার গিলাফ স্থাপনকে অত্যন্ত সম্মানজনক কাজ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।