শিক্ষিতরা চান সরকারি চাকরি,অতিদরিদ্র আর নিম্ববিত্তরা চান বিদেশে পাড়ি জমাতে

শিক্ষিতরা চান সরকারি চাকরি,অতিদরিদ্র আর নিম্ববিত্তরা চান বিদেশে পাড়ি জমাতে

প্রতীকী ছবি

দেশের শিক্ষিত যুবকদের বেশিরভাগই (৫৭% নারী এবং ৪২%) সরকারি চাকরি চান। ধনী ও শিক্ষিতদের অনেকেই চান মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং তাদের নিজস্ব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা লাভ করতে। অপরদিকে শিক্ষাবঞ্চিত বা স্বল্পশিক্ষিত অতিদরিদ্র আর নিম্ববিত্তরা জীবিকার তাগিদে বিদেশে পাড়ি জমাতে চান।

ব্র্যাক, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথভাবে পরিচালিত জাতীয়ভাবে প্রতিনিধিত্বমূলক একটি যুব-জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. জাফর উদ্দিন, ব্র্যাকের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ এবং বিআইজিডি-এর নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন।

এদিকে যুব জরিপ ২০১৮-কে স্বাগত জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, এ ধরনের কাজ আমাদের অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করবে, কর্মক্ষেত্র চিহ্নিত করতে সহায়ক হবে। তবে সমস্যাগুলো ক্রমান্বয়ে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি আমরা। কর্মক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা বাড়ছে, প্রাথমিক শিক্ষক পদে ৬০%-এর উপরে নারীদের নিয়োগ দেয়া হয়। যুবসমাজের উন্নয়নে দেশের বিভিন্ন স্থানে যুব গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুবকদের সমস্যা, সম্ভাবনা ও চাহিদা নিরূপন করে এসব কেন্দ্র থেকে সহায়তা দেয়া হবে।

ব্র্যাক যুব জরিপ ২০১৮ শীর্ষক এ জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ হচ্ছে যুব। দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর (১৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী) সংখ্যা কর্মসক্ষমতাহীন ব্যক্তির (১৫ বছরের নিচে এবং ৬০ বছরের উপরে) সংখ্যার চেয়ে বেশি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমৃদ্ধ করতে এই যুবরা মূল চালিকাশক্তি হতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে যুবদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতেই এই যুব-জরিপ পরিচালনা করা হয়।

এতে বলা হয় শিক্ষিত যুবদের মধ্যে ৫৭% নারী এবং ৪২% পুরুষ সরকারি চাকরি করতে চান।এইচএসসি অথবা এর নীচে শিক্ষাগত যোগ্যতার পুরুষদের মধ্যে প্রায় ৯০% উপার্জনমূলক কাজের সাথে যুক্ত। যাদের লেখাপড়া যত বেশি, তারা উপার্জনমূলক কাজের সঙ্গে বেশি দেরিতে যুক্ত হন। নারীদের ক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত শিক্ষিতদের মাত্র ৫% উপর্জনমূলক কাজে যুক্ত। যারা লেখাপড়া করে না, উপার্জনমূলক কাজে যুক্ত নেই, এমনকি কোনো প্রশিক্ষণও (এনইইটি) গ্রহণ করছেন না, এদের প্রায় ৯০ ভাগই নারী। প্রায় ২০% অংশগ্রহণকারী বিদেশে কাজ করতে আগ্রহী হলেও তাদের মধ্যে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ এ ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে পরিকল্পনা করছে।

পছন্দের স্বাধীনতা অনুযায়ী, পুরুষ যুবরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বন্ধু ও পেশা নির্বাাচন, স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও এবং অর্থ ব্যয়ে অধিক স্বাধীনতা উপভোগ করছে। নারীরা বলছেন এই সকল ক্ষেত্রে স্বাধীনতার অভাব রয়েছে। মাত্র ৪০% নারী স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ পায়, যা পুরুষের অর্ধেক। তবে সবাই প্রধানত দুটি বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন: লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা (যেমন বাল্যবিয়ে, যৌতুক, যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণ) এবং মাদক সম্পর্কিত সমস্যা।