হজের খুতবায় করোনা থেকে মুক্তি ও গুনাহ মাফের জন্য প্রার্থনা

হজের খুতবায় করোনা থেকে মুক্তি ও গুনাহ মাফের জন্য প্রার্থনা

এ বছর পবিত্র হজের আরবি খুতবা অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও অনুবাদ করে সম্প্রচার করা হয়।

মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার এ বছরের পবিত্র হজ পালিত হয়েছে। আরাফা থেকে ফেরার পথে রাতে মুজদালিফায় অবস্থান করে সকালে ফের মিনার তাবুতে অবস্থান নিয়েছেন হাজীরা। সেখান থেকেই জামারাতে কংকর নিক্ষেপ করে কুরবানী করে ইহরাম ভঙ্গ করবেন হাজীরা।

এদিকে আরাফায় অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে দেয়া হজের খুতবায় শায়খ আবদুল্লাহ বিন সোলায়মান আল মানিয়া মহামারি থেকে মুক্তি, গোনাহ মাফ, আল্লাহর রহমত কামনাসহ নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। এবছর করোনা পরিস্থিতিতে মাত্র দশ হাজারের মতো মুসলিমের অংশগ্রহণে পবিত্র হজ পালিত হয়। অন্যান্য বছর বিশ্বের ১৬০টি দেশের প্রায় ২৫ লাখ মানুষ হজ পালন করে আসছিলেন।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় হিসাব অনুযায়ী ৯ জিলহজ দুপুর সাড়ে বারোটায় হজের খুতবা শুরু করেন শায়খ মানিয়া। এ বছরের হজের খুৎবার জন্য তাকে মনোনীত করেন সৌদি বাদশা। লিখিত খুতবায় সীমিত পরিসনে হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি সরকারের পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, খুব দ্রুত বৈশ্বিক এই মহামারি কেটে যাবে। আবার আগের মতো হজ ও উমরা যাত্রীদের আগমনে মুখরিত হবে পবিত্র এই ভূমি।

৩০ মিনিটব্যাপী খুতবার শেষের দিকে তিনি সৌদি সরকারের জন্য দোয়া করেন, বিশ্বে শান্তি, সমৃদ্ধি কামনা করেন। রোগ মুক্তি চান। করোনাকে মহামারি উল্লেখ করে এর থেকে বিশ্ববাসীর হেফাজতের জন্য দোয়া করেন। সর্বাবস্থায় আল্লাহর দরবারে যাবতীয় সমস্যার জন্য বেশি বেশি দোয়া করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি।

খুতবায়, মানুষের অধিকার বিশেষ নারীর অধিকার ও উত্তরাধিকার সম্পত্তি বন্টনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। ওয়াদাপালন, মাতাপিতার সেবা, সৎকাজের আদেশ, অসৎকাজের নিষেধ, মানবসেবা, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় নাগরিকদের সচেতন হওয়ার বিষয়ও উল্লেখ করেন তিনি।

কুরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে মানুষকে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসারী হওয়ার আহ্বান জানান। আরাফাতের ময়দানে করণীয়সহ হজের পরবর্তী বিষয়গুলো তুলে ধরেন। নামাজ, পবিত্রতা অর্জন, রোগীর সেবা, মহামারি উপদ্রুত এলাকায় প্রবেশ না করা এবং ওইসব এলাকা থেকে অন্যত্র না যাওয়ার শরীয়তের বিধানগুলো বর্ণনা করেন।

খুতবার পর জোহরের নামাজের আজান দেন মসজিদের হারামের মুয়াজ্জিন শায়খ ইমাদ বিন আলি ইসমাইল। এরপর দুই ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেন আলাদা জামাতে।

এ বছর পবিত্র হজের আরবি খুতবা অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও অনুবাদ করে সম্প্রচার করা হয়। বাংলা ছাড়াও বাকি নয়টি ভাষা হলো- ইংরেজি, মালয়, উর্দু, ফার্সি, ফ্রেঞ্চ, মান্দারিন, তুর্কি, রুশ ও হাবশি।