রিয়ালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে ম্যান সিটি

রিয়ালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে ম্যান সিটি

গোল করার পর ম্যান সিটির খেলোয়ারদের উল্লাস

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ের পর নিজেদের মাঠেও জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে জায়গা করে নিল ম্যানচেষ্টার সিটি। শুক্রবার রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে রিয়াল মাদ্রিদকে ২-১ হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের ছাড়পত্র জোগাড় করে নিল ইংল্যান্ডের এই ক্লাবটি। শনিবার শেষ চারে ওঠার লড়াই পেপ গুয়ার্দিয়াওয়ালার ছেলেরা খেলবে লিওঁ-র বিরুদ্ধে।

এদিন মাঠের বাইরে লড়াই ছিল দুই ক্ষুরধার মস্তিষ্কপ্রস্তুত কোচের। রিয়ালের কোচ হিসেবে কোনও দিন ইংলিশ প্রিমিয়র লিগের এই এলিট ক্লাবের বিরুদ্ধে জিততে পারেননি জিনেদিন জিদান৷ এবারও পারলেন না৷ ফেব্রুয়ারিতে ঘরের মাঠে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে হারের পর এদিন জেতা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না জিদানের রিয়াল মাদ্রিদের। কিন্তু সেটা হয়নি৷ উলটে ডিফেন্সিভ খেলতে গিয়ে গুয়ার্দিওয়ালার ম্যান সিটি-র কাছে হেরে গেল জিদানের রিয়াল।

প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ১-২ হারের পর এদিন ইতিহাদ স্টেডিয়ামে রিয়ালের কাছে কাজটা ছিল অনেক কঠিন। কিন্তু সিটির আক্রমণের মুখে বেশিরভাগ সময় নিজেদের রক্ষণ সামলাতেই বেশি ব্যস্ত থাকতে হয় জিদানের দলকে। সেটাও ভালোভাবে পারেনি তারা। ম্যাচের ৯ মিনিটে এগিয়ে যায় সিটি। গোলটি তাদের একরকম উপহারই দেয় রিয়াল। থিবো কোর্তোয়া লম্বা শট না-নিয়ে বাইলাইনের কাছে রাফায়েল ভারানেকে খুঁজে নেন। ফরাসি ডিফেন্ডারও শট নেননি। শট নিতে বিলম্ব করায় সেই দ্রুত ছুটে গিয়ে বল কেড়ে নেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের কাছ থেকে বল পেয়ে অনায়াসে বল গোলে ঠেলে দেন ছন্দে থাকা স্টার্লিং।

সিটি’র হয়ে এটি ইংলিশ ফরোয়ার্ডের শততম গোল। পরে আরও একটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। ১৯ মিনিটে সবাইকে পিছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন স্টার্লিং। সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক। তবে সিটি ফরোয়ার্ড শট নেওয়ার আগেই দারুণ স্লাইডে দলকে বিপদমুক্ত করেন কাসেমিরো। দু’ মিনিট পর ডি-বক্সের মাথা থেকে করিম বেনজেমার শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন এদেরসন। পরের মিনিটে এদেন আজারের জোরালো শট আটকে দেন সিটি গোলরক্ষক।

ম্যাচের ২৮ মিনিটে সমতা ফেরান বেনজেমা। রডদ্রিগের চমৎকার ক্রসে উঁচুতে লাফিয়ে দারুণ হেডে ম্যান সিটি-র জালে বল ঢোকাতে সক্ষম হন ফরাসি স্ট্রাইকার। ৪২ মিনিটে ফিল ফোডেনের শট একটুর জন্য লক্ষভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটে কেভিন ডে’ব্রুইন শট নেওয়ার আগের মুহূর্তে বল সরিয়ে নেন দানি কারবাহাল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ আসে স্টার্লিংয়ের সামনে। ৪৮ মিনিটে ডিফেন্স ভেদ করে সামনে থাকা গোলরক্ষককে এড়াতে পারেননি তিনি। কোর্তোয়ার আঙুল ছুঁয়ে বল চলে যায় বাইরে। কর্নার থেকেও সুযোগ আসে সিটির সামনে৷ এবারও রিয়াল গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেনি তারা। একের পর এক আক্রমণে রিয়াল ডিফেন্স কাঁপিয়ে দেওয়া সিটি আরও একটি সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে।

তবে ম্যাচের ৫৪ মিনিটে কাসেমিরোর ভুলে নিজেদের সীমানায় বল পেয়েও সুযোগ হাতছাড়া করে রিয়ালও। সতীর্থের পা-ঘুরে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে যান স্টার্লিং। ছুটে এসে কোনওমতে দলকে বাঁচান কোর্তোয়া। ১০ মিনিট পর গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে সুযোগ হাতছাড়া করেন বেনজেমা। ৬৬ মিনিটে আবারও রিয়ালের ত্রাতা কোর্তোয়া। খুব কাছ থেকে জেসুসের বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক।

তবে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে এই ডিফেন্ডারের রাতটা কেটেছে দুঃস্বপ্নের মতো। তাঁর ভুলে ৬৮ মিনিটে আবার এগিয়ে যায় সিটি। মাঝ মাঠ থেকে উড়ে আসা বল প্রথমে হেড করতে পারেননি৷ দ্বিতীয়বারে দুর্বল হেড দিয়ে বল দিতে চেয়েছিলেন কিপারকে। কিন্তু ছুটে গিয়ে মাঝপথে বল ধরে জালে পাঠান জেুসস। সেই সঙ্গে ম্যান সিটি-কে পৌঁছে দেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে।