সিলেটে জঙ্গিদের ভাড়া বাসায় অভিযান

সিলেটে জঙ্গিদের ভাড়া বাসায় অভিযান

‘শাহ ভিলা’কে কম্পিউটার সেন্টার হিসাবে ব্যবহার করত জঙ্গিরা!

সিলেট নগরীর টিলাগড় এলাকার শাপলাবাগে জঙ্গিদের ভাড়া করা বাসায় অভিযান চালিয়ে উল্লেখ করার মতো কোনো কিছু পায়নি পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। নব্য জেএমবির সদস্যরা এই বাসার চারতলার একটি ইউনিটে ‘কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার’ খোলার কথা বলে ভাড়া নেয় বলে তথ্য নিশ্চিত করেছেন তারা । জঙ্গিরা এই বাসায় থাকত না বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসএমপির শাহপরান সেকেন্ড অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা।

বাড়ির মালিক শাহ মোহাম্মদ সামাদ আলী পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার’ খোলার কথা বলে বাসা ভাড়া নিয়েছিল তারা। এজন্য দুই মাসের অ্যাডভান্সও দিয়েছে। তবে তারা এই বাসায় উঠেনি এখনও।

তিনি বলেন, নাইম ও সায়েম এসে আমাকে বলেছিল- ‘আমরা ৪-৫ জন এমসি কলেজের শিক্ষার্থী এখানে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার করতে চাই। চুক্তিপত্র তৈরি করে কয়েকদিন পরে আসব। এরপর আমরা বাসায় উঠব। কিন্তু এরপর মাসখানেক তারা আসেনি। হঠাৎ গত ২ জুলাই তারা এসে আরও একমাসের ভাড়া দিয়ে চলে যায়’।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টায় দুই জঙ্গিকে সঙ্গে নিয়ে ওশাপলাবাগের ৪০/এ শাহ ভিলা ঘেরাও করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।

এর আগ রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর জালালাবাদ এলাকার ৪৫/১০ লোহানী হাউজে আটক জঙ্গি সানাউল ইসলাম সাদিকে নিয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।

অভিযানে বোমা বানানোর সরঞ্জামসহ একটি শক্তিশালী আইইডি উদ্ধার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী সিটি করপোরেশনের ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিল আফতাব হোসেন খান।

প্রসঙ্গত, টানা দুইদিনের অভিযানে সিলেট জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার নাইমুজ্জামানসহ ৫ জেএমবির সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের একটি দল। তাদের আটক করে গতকালই ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

অভিযান সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করেছিল গ্রেফতার জঙ্গিরা। এ জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খুব শীঘ্রই জঙ্গিরা এ হামলা চালাতে চেয়েছিল। হামলার জন্য জঙ্গিদের অপারেশনাল টিমও নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই পরিকল্পনা সফল হতে দেয়নি পুলিশ।

সিটিটিসির উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি রাজধানীর পল্টনে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। গ্রেফতারকৃতরা ওই বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত। গ্রেফতার ৫জনকে বুধবার আদালতে হাজির করা হতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হবে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত ৫ জনের মধ্যে নাইমুজ্জামান সিলেট জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে কাজ করে আসছিল। সিলেট অঞ্চলে জঙ্গিদের সংগঠিত করা, তাদের প্রশিক্ষণ এবং জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করার মূল দায়িত্ব নাইমুজ্জামান পালন করত।

গ্রেফতার হওয়া নাইমুজ্জামান পুলিশকে জানিয়েছে, তাদের সিলেট শাহজালাল মাজারে হামলার পরিকল্পনা ছিল। বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা নিয়ে তারা ইতোমধ্যে প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিল। ওই হামলা কখন হবে, কীভাবে করা হবে এর জন্য তাদের অপারেশনাল টিমও নির্ধারণ করা হয়েছিল।

 

সূত্র: যুগান্তর